৭ প্রকৌশলী ও এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ২টি দুর্নীতি মামলা

30

স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক সংস্কারের নামে সরকারি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) সিলেটের সাবেক অতিরিক্ত প্রকৌশলীসহ ৭ প্রকৌশলী ও এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন আইনে মামলা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন ঢাকার উপ-পরিচালক মো. ফরিদ আহমদ পাটোয়ারি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় দু’টি মামলা করেন। মঙ্গলবার মামলা (নং ৫৫ ও ৫৬) দু’টি নথিভূক্ত করা হয়েছে বলে জানান থানার ওসি গৌছুল হোসেন।
আসামিরা হচ্ছেন- উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মাসুক আহমদ, সাবেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, সিলেট সড়ক জনপথ বিভাগ-১ এর সাবেক উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আবুল বরকত মো. খুরশীদ আলম, সড়ক জনপথ বিশ্বনাথ উপজেলার প্রাক্তন উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী বর্তমানে ঢাকা মিরপুর উপকরণ পরীক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগে কর্মরত মো. তানভীর হোসেন, সওজ সিলেটের প্রাক্তন নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম, সওজ সিলেটের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চন্দন কুমার বসাক, প্রাক্তন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবীর, মেসার্স জন্মভূমি নির্মাতা ওহিদুজ্জামান চৌধুরী অ্যান্ড দি নির্মিতি (জন) জেবি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী লুৎফুর রহমান।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়- সরেজমিন পরিদর্শনকালে ১ কোটি ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৪১৬ টাকার প্রকল্পের কাজের গুণগতমান উপকরণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমাণিত হয়। এই টাকার অসম্পাদিত কাজকে সম্পন্ন দেখিয়ে বিলের অনুমোদন দিয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইফতেখার কবীর ঠিকাদারসহ সওজের অন্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। ঠিকাদার লুৎফুর রহমান সড়ক বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত প্যাকেজ (নং-ইজিপি/২২(টোয়েন্টিটু)এসিই/এসজেড/২০১৫-১৬ টেন্ডার আইডি নং ৩৩১৭৮) এর আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সিলেট সড়ক বিভাগের অধীনে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের ২০ দশমিক ৪৮০ কিলোমিটারের মধ্যে বিভিন্ন অংশে পিএমপি সড়ক কর্মসূচির আওতাধীন ডিবিএস ওয়ারিং কোর্স বেস কোর্স, এগ্রিগেট সে টাইপ-১ করণকাজের নটিফিকেশন অফ এওয়ার্ডপ্রাপ্ত ঠিকাদার ছিলেন লুৎফুর রহমান।
২০১৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর দরপত্রের শর্ত মোতাবেক কাজটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করেননি। ঠিকাদারকে ৫টি বিলের মাধ্যমে বিভিন্ন আয়কর কর্তন বাদে নীট ৯ কোটি ৮৬ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৪ টাকা পরিশোধ করা হয়। ঠিকাদার সওজের অন্য কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় উক্ত টাকা আত্মসাত করেছেন।
দুদকের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে সিলেট সড়ক বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত প্যাকেজ নং-ই-জিপি/২২(টোয়েন্টিটু) এসিই/এসজেড/২০১৫-১৬ টেন্ডার আইডি নং-৩৩১৭৮-এর আওতায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সিলেট সড়ক বিভাগের অধীন সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে (আর-২৮০) এলআরপি চে-২৮১০ এবং এলআরপি চে ৫০০০ হতে এলআরপি চে.২০ দশমিক ৪৮০ কিলোমিটার এর মধ্যে বিভিন্ন অংশে পিএমপি (সড়ক) কর্মসূচির আওতাধীন ডিবিএস ওয়ারিং কোর্স, ডিবিএস বেস কোর্স ও এগ্রিগেট বেস টাইপ-১ কাজ, উক্ত প্রকল্পের সম্পাদিত কাজ পাওয়া যায়নি।
তাছাড়া এই প্রকল্পের সম্পাদিত কাজের গুণগতমান স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে ল্যাবরেটরি টেস্টে প্রমাণিত হয়।
এছাড়া প্রতারণা করে ৬২ লাখ ৬১ হাজার ২৬০ টাকা আত্মসাতের দায়ে ওপর আরেকটি মামলা (নং-৫৫(৩)২০১৮) দায়ের করেন উপ পরিচালক মো. ফরিদ আহমদ পাটোয়ারি। ওই মামলায় প্রাক্তন উপ সহকারী প্রকৌশলী মো. রাসেলকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলার অপর আসামিরা হলেন- সওজ সিলেটের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মনিরুল ইসলাম, তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চন্দন কুমার বসাক, অতিরিক্ত প্রকৌশলী ইফতেখার কবীর ও ঠিকাদার লুৎফুর রহমান।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, দুর্নীতির অভিযোগে দুদক থানায় গত সোমবার পৃথক দুটি এজাহার জমা দিলে তা মামলা হিসেবে মঙ্গলবার নথিভুক্ত করা হয়েছে।