অবহেলিত এক জনপদ সীমান্তবর্তী লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউ.পির ১নং ওয়ার্ড

88

নিজাম উদ্দিন কানাইঘাট থেকে :
কানাইঘাট উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন খনিজ ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর সীমান্তবর্তী ১নং লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউ.পির যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে পারলেই এ এলাকার ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ড সাধিত হবে বলে সচেতন মহল মনে করেন। ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ ১নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্য গেসা এ ওয়ার্ডটি অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। সাবেক সরকারী দলীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ আহমদ মজুমদার লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউ.পির বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ব্যাপক কাজ করে ছিলেন। বর্তমান সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন উন্নয়নের ক্ষেত্রে আন্তরিক থাকলেও যে ভাবে কাজ করার কথা সে ভাবে উন্নয়ন হচ্ছে না বলে অনেকে জানিয়েছেন। বর্ষা মৌসুমে নদী যোগে এবং শুকনো মৌসুমে বেশির ভাগ মানুষ পায়ে হেটে দৈনন্দিন কাজ করে থাকেন। যোগাযোগ বিচ্চিন্ন থাকায় এই এলাকায় কোন ধরনের জন পরিবহন অথবা রিক্সাও চলে না। ১নং ওয়ার্ডের ইউ.পি সদস্য সমাজকর্মী সেলিম চৌধুরীর জানান তার ওয়ার্ডটি ইউনিয়নের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মেঘালয় ও আসাম রাজ্যের পাদদেশে অবস্থিত । মোট ১৫টি মৌজা নিয়ে তার ওয়ার্ডটিতে ২টি বিজিবি ক্যাম্প রয়েছে। পুরো ওয়ার্ডের মধ্যে মাত্র হাফ কিলোমিটার রাস্তা পাকা রয়েছে। ওয়ার্ডের কোনগ্রামে অদ্যাবধি পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। মাটির রাস্তা একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম। তাও বর্ষা মৌসুমে মাটির রাস্তাগুলো কাদায় ভরে যায়, রাস্তার মধ্যে অনেক কালভার্ট না থাকায় চরম দূর্ভোগ পুহাতে হয় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও হাজার হাজার জনসাধারন কে। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর এ ওয়ার্ডটির পাহাড়ী গ্রামগুলোতে ব্যাপক ফলজ ও বনজ সম্পদ রয়েছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত না থাকায় জিনিসপত্রে সঠিক মূল্য তারা পাননা। অনেকে জানিয়েছেন পার্শবর্তী ভারতের মেঘালয় ও আসাম রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় পাকা সড়ক রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বর্ডারগার্ড বিজিবির জোয়ানরা অত্যন্ত কষ্টের সাথে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। বিভিন্ন সময় বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে চোরাকারবারীরা মদ, ফেন্সিডিলসহ মাদক দ্রব্য নিয়ে আসে। মাঝে মধ্যে কাটা তারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে চোরাকারাবারীরা গরু নিয়ে আসে। এতে করে বিজিবির সদস্যরা নানা সমস্যায় পড়েন। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হলে ঐ এলাকায় অপরাধ মূলক কর্মকান্ড নির্মুল ও চোরাচালান প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে। ইউ.পি সদস্য সেলিম চৌধুরী সহ স্থানীয় এলাকাবাসীর আকুল আবেদন সুরমা ডাইক হতে কাড়াবাল্লা টুু ডোনাবাজার পর্যন্ত রাস্তা পাকা করণ ও সুরমা ডাইক হতে উত্তর মুখী সতিপুর বাকুড়ি মসজিদ থেকে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত রাস্তা ও বাকুড়ি ফখরুদ্দীনের বাড়ী হতে পশ্চিম মুখী রাস্তা ইট সলিং অথবা পাকা করন নির্মাণের আহ্বান জানান। সেই সাথে তিনি বলেন, বিজিবির জোয়ানদের টহল জোরদার ও চোরা চালান প্রতিরোধে উক্ত রাস্তার কয়েকটি স্থানে ছোট পাকা কালভার্ট করা অত্যন্ত জরুরী। সরকারের ঐক্লান্তিক প্রচেষ্টায় তিনি তার ওয়ার্ডের উন্নয়ন মূলক ও সেবা মুখী কর্মকান্ড এগিয়ে নিতে কাজ করে চাচ্ছেন। গত অর্থ বছরের এলজিএসপি, এডিবি ও টিআর কাবিকার আওতায় উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ড সচ্ছতার সহিত বাস্তবায়ন করা হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সৌরবিদ্যুৎ প্যানেল স্থাপন, কারিতাসের উদ্যোগে দরিদ্রদের মধ্যে গরু ছাগল, ডিপ-টিউবওয়েল বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বিশেষ করে খাড়া বাল্লা হতে ডোনা পর্যন্ত রাস্তাটি পাকা করণ এবং সুরমা ডাইক এলাকায় সৌর প্যানেল স্থাপন করার জন্য সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।