দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দিতে জোড়া খুনের ঘটনায় ৯ শতাধিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, আটক ১

70

স্টাফ রিপোর্টার :
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ সুরমা বরইকান্দিতে ২ গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বরইকান্দি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি বরইকান্দির মাঝপাড়া গ্রামের মাসুক মিয়া (৫০) ও বাবুল মিয়া (৩৫) নামের দুই ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় ৯ শতাধিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ১০৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ৭০০-৮০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে দক্ষিণ সুরমা থানায় এ হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহত বাবুল মিয়ার বড় ভাই সেবুল মিয়া।
মামলার প্রধান আসামী বরইকান্দি ইউনিয়নের ১০নং রোডের কাজিবাড়ির বাসিন্দা ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৩নং তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াদুদ আলফু মিয়া এবং তার ছেলে সাইফ ও মুহিদ। নিহত মাসুক মিয়া সদর উপজেলা শ্রমিকলীগ নেতা। তিনি মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সিলেট সরকারী কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ফারুক আহমদের আপন বড় ভাই। আর বাবুল মিয়া বরইকান্দি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
তবে গত বুধবার রাতে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৪ রাউন্ড কার্টুজের খোসা উদ্ধার করে পুলিশ। এ মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহজাহান নামক একজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। এলাকায় অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। দক্ষিণ সুরমা থানার (ওসি) খায়রুল ফজল এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই রিপন দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল ফজলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রাতে বরইকান্দি ১০ নম্বর রোডের দুখিরপাড়ার বাসিন্দা কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ আলফু মিয়ার ছেলের সঙ্গে বরইকান্দি এলাকার ৩ নম্বর রোডের মাঝপাড়া এলাকার বাসিন্দা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গৌছ মিয়ার ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে রাতেই আওয়ামী লীগ নেতা গৌছ মিয়া বিপুল সংখ্যক লোকজন নিয়ে দুখিরপাড়ায় আলফু মিয়ার বাড়িতে হামলা করেন। তখন দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় অন্যান্য এলাকার লোকজন মিলে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করেন। তুচ্ছ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত মঙ্গলবার সকালে সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা ছিল। কিন্তু সকাল হওয়ার সাথে সাথেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। কোম্পানীগঞ্জ থেকে চেয়ারম্যান আলফুর পক্ষে বিপুল সংখ্যক লোক চলে আসেন বরইকান্দিতে। সকালে তাদেরকে সাথে নিয়ে আলফু চেয়ারম্যান সকাল ৯ টার দিকে আওয়ামী লীগ নেতা গৌছের বাড়িতে এসে হামলা চালান। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে গুলি বিনিময় ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ হয়। এ সময় বরইকান্দি এলাকার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষ চলাকালিন সময়ে আওয়ামী লীগ নেতা গৌছ মিয়ার পক্ষের মাসুক মিয়া ও বাবুল মিয়া নিহত হন। টানা আড়াই ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। আহতদের মধ্যে সুজেল আহমদ, রুহেল মিয়া, সলিমুদ্দিন, তৈয়ব আলী, আবুল কাহের, নাজিম উদ্দিন, আহমদ হোসেন, তাজুল ইসলাম, ইলিয়াস ও দুলাল আহমদকে ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি আহতদের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।