সিলেট সহ তিন শিক্ষা বোর্ডে যারা সচিব, তারাই চেয়ারম্যান !

22

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দেশের আট শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদটি দুই মাস ধরে শূন্য। সব কাজ চলছে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিয়ে। এই বোর্ডের সচিব ও সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। একইভাবে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য রয়েছে সিলেট ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডেও। অথচ এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর বাকি আর মাত্র ২৫ দিন।
এ অবস্থায় এইচএসসি পরীক্ষায় সম্ভাব্য প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঝুঁকি সফলভাবে এড়ানো যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।
সদ্য শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। অভিযোগ ওঠে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ১১ কর্মকর্তার একটি সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছিল। এরপর গত ২২ ফেব্র“য়ারি এই শিক্ষা বোর্ডের সাতজনকে বদলি করা হয়। মো. শাহেদুল খবির তখনও সচিব ও চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন।
গত ২৪ ফেব্র“য়ারি এসএসসি’র লিখিত (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।
প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নতুন করে কিছু কৌশল হাতে নিয়েছে। আর সেসব কৌশল বাস্তবায়নে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডসহ দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ৭ জানুয়ারি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমানকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর থেকে শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
জানা গেছে, সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান কে এম গোলাম কিবরিয়া তাপাদারকে অবসরের যাওয়ার আগমুহূর্তে গত ৪ ফেব্র“য়ারি বদলি করা হয় তার মূল পদ কলেজে। এরপর ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি অবসরে যান। এতে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। তবে ওই বোর্ডের সচিব মোস্তফা কামাল আহমেদ চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
মোস্তফা কামাল আহমেদ বলেন, ‘আমাকে চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
একইভাবে চেয়ারম্যানের পদ শূন্য হয়েছে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডেও। এই শিক্ষা বোর্ডের সচিব অধ্যাপক মো. আবদুস ছালামকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়। অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাকে চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে।’
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘তিনটি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে চূড়ান্ত হয়ে ফাইল ফেরত এলে শিক্ষা বোর্ডগুলোতে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হবে।’
অভিযোগ রয়েছে, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিব পদ দুটি অধ্যাপক সমমর্যাদার হলেও বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের অর্থনীতি বিষয়ের সহযোগী অধ্যাপককে দিয়েই তা চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে, ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদাধিকার বলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি। অধ্যাপক না হলেও মো. শাহেদুল খবিরকে চেয়ারম্যানের এই দায়িত্ব দেওয়ায় পদটির ‘অমর্যাদা’ হয়েছে বলে মনে করেন কেউ কেউ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, তারা শাহেদুল খবিরের সঙ্গে বৈঠক করতেও বিব্রতবোধ করেন।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব সহযোগী অধ্যাপক শাহেদুল খবির বলেন, ‘আমার পদায়ন আমি করি না। আমি সরকারি কর্মকর্তা, আমাকে যেখানে দেওয়া হবে সেখানে চলে যাবো।’