হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন ও ৪ জনকে ১০ বছরের কারাদন্ড

43

স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানীনগরে হাজী আবদাল হোসেন হত্যা মামলায় ২ জনকে যাবজ্জীবন, ৪ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ২জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামীকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার সিলেটের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালত ও শিশু আদালতের বিচারক এ. এম. জুলফিকার হায়াত এ রায় প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার উত্তর দাওরাই গ্রামের মৃত আলতাফ মিয়ার পুত্র মো: নজরুল ইসলাম (৩৫) ও ওসমানীনগর থানার হলিমপুর গ্রামের আব্দুর গফুরের পুত্র সাহেল আহমদ উরফে সায়েল (২১) এবং ১০বছরের দন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- ওসমানীনগর থানার ভাগলপুর গ্রামের আব্দুল আকি’র পুত্র ফিরোজ আলী (৪০), তার ভাই আনা মিয়া (৩৫) ও রোশন মিয়া (৩০) এবং একই থানার ভেরারাই গ্রামের মো: সাজিদ উল্লার পুত্র জয়নাল আবেদীন (৩০)। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- হবিগঞ্জের বানিয়াচং থানার সাগরদীঘিরপূর্বপার গ্রামের মো: সওদাগরের পুত্র রফিক (২১) ও ওসমানীনগর থানার মতিয়ারগাঁও গ্রামের আনুর মিয়ার শিশু পুত্র আক্তার উরফে মো: আক্তার হোসেন (১৩)। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামী আনা মিয়া ও খালাসপ্রাপ্ত রফিক ও আক্তার আদালতে উপস্থিত থাকলেও অপর সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা পলাতক ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টার দিকে ওসমানীনগর থানার ভেরারাই গ্রামের হাজী আবদাল হোসেন (৬৫) তার পরিবারের সকল সদস্যকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত অনুমান দেড়টার দিকে আসামীরা সিদঁ কেটে একদল ডাকাত ধারালো অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় হাজী আবদাল হোসেনকে মাথায় ও শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে ও তার স্ত্রী মিসেস সফা বেগমকে গুরুতর আহত করে আলমীরা ভেঙ্গে নগদ ৮৭ হাজার টাকা ও ৫ ভরি স্বর্ণালংকারসহ ২ লাখ ৮৭ হাজার টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের চিৎকারের স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় পুলিশ নজরুল ইসলাম, ফিরোজ আলী, সাহেল আহমদ, জয়নাল আবেদীন, রফিক ও শিশু আক্তারকে আটক করে। পরে গুরুতর আহত হাজী আবদাল হোসেনকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এ ঘটনায় নিহত হাজী আবদাল হোসেনের স্ত্রী মিসেস সফা বেগম বাদি হয়ে ওসমানীনগর থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতীর অপরাধ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। নং ৩৩ (২৫-৯-২০০৮), শিশু ১৪/১৪ ও দায়রা-৪৩/২০১০।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৯ সালের ৭ আগষ্ট ওসমানীনগর থানার এসআই মো: আজিজুর রহমান ৭ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১০ সালের ২২ এপ্রিল আদালত এ মামলার বিচারকায্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী মো: নজরুল ইসলাম ও সাহেল আহমদ উরফে সায়েলকে পেনাল কোড এর ৩৯৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে যাবজ্জীবন ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও আসামী ফিরোজ আলী, আনা মিয়া, জয়নাল আবেদীন, রোশন মিয়াকে একই ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং রফিক ও শিশু আক্তারকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এপিপি এডভোকেট মো: নিজাম উদ্দিন ও আসামীপক্ষে স্টেডডিফেন্স এডভোকেট শাহ আলম মহি উদ্দিন মামলাটি পরিচালনা করেন।