জগন্নাথপুরে মেলা নিয়ে দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান, বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা

46

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুরে মেলা নিয়ে এলাকাবাসী ও আয়োজনকারীরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। এ নিয়ে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কায় শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। এখানে শুরু হয়েছে আধিপত্য ও অস্তিত্বের লড়াই। যে কোন মূল্যে বসন্ত মেলার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে চায় আয়োজনকারীরা। আবার তা প্রতিহত করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে এ অবস্থা চলছে। এ নিয়ে এলাকায় থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। মেলা বন্ধের দাবিতে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করছেন এলাকাবাসী। তাতেও কর্ণপাত করছে না আয়োজনকারী মহল। এ মেলাটি প্রতিহত করা এলাকাবাসীর কাছে এখন অস্তিত্বের লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতো সব আন্দোলন করার পরও আয়োজনকারীরা পিছু না হঠায় দিনদিন প্রতিবাদী জনতার সংখ্যা ও ক্ষোভ বেড়েই চলেছে।
জানা গেছে, জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের সাদিপুর গ্রামের হাওরে বসন্ত মেলার নামে অসামাজিক কর্মকান্ডের আসর বসাতে চায় একটি মহল। তা প্রতিহত করতে আন্দোলন করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। অবশেষে এলাকাবাসীর আন্দোলনকে উপেক্ষা করে মেলার প্যান্ডেল তৈরী করা হয়। আগামি শনিবার রাত থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে প্রতিবাদী জনতার ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার স্থানীয় কলকলিয়া ইউপি কার্যালয় ভবনে এলাকাবাসীর উদ্যোগে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কলকলিয়া ইউপি আলহাজ্ব আবদুল হাসিমের সভাপতিত্বে ও ইউপি সদস্য আবদুল কাইয়ূমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হক, উপজেলা আ’লীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক কুতুব উদ্দিন, সমাজসেবক আনিসুর রহমান তুতি, মাওলানা মতিউর রহমান, মাওলানা জুবায়ের আহমদ, মাওলানা খন্দকার রুহুল আমিন, আবদুস সোবহান, ডা.হাবিবুর রহমান, ডা.শিব্বির আহমদ, লুৎফুর রহমান, জিল্লুর রহমান, সাদিকুর রহমান নানু, জহিরুল ইসলাম লেবু, ফয়সল আহমদ, আবদুল গফ্ফার, আজাদ মিয়া, মোহাম্মদ আলী, মাওলানা আবদুল খালিক, মাওলানা আবদুল হামিদ, ইউপি সদস্য মুজাফ্ফর আলী লিটন, ইউপি সদস্যা হনুফা বেগম, রসিকা বেগম, ইউপি সচিব সামসুল আলম, মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রমুখ।
এ সময় জগন্নাথপুর উপজেলা প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মিয়া, যুগ্ম-সম্পাদক হিফজুর রহমান তালুকদার জিয়া সহ জগন্নাথপুর, ছাতক ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শতশত প্রতিবাদী জনতা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বক্তারা বলেন, আইনগতভাবে মেলাটি বন্ধের দাবি জানিয়ে আমরা প্রশাসনের দ্বারেদ্বারে ঘুরেও কোন কাজ হচ্ছে না। এতে প্রতিবাদী জনতার ক্ষোভ আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বক্তারা আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন আগামী ২ মার্চ শুক্রবার দুপুরের মধ্যে মেলার প্যান্ডেলটি ভাঙতে হবে। তা না হলে শুক্রবার বিকেলে সর্বস্তরের প্রতিবাদী জনতাকে নিয়ে প্যান্ডেলটি ভেঙে ফেলা হবে। এতে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। আর দায় নিতে হবে আয়োজনকারী মহল ও প্রশাসনকে। এছাড়া বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মেলাটি ভাঙতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় টানটান উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন মুহূর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কায় স্থানীয় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।