হবিগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ৩০, পৌর মেয়র জি কে গউছসহ আহত অর্ধশতাধিক

58

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিলে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশ রাবার বুলেট ছুঁড়লে অন্তত ৩০ জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় পুলিশের লাঠিপেটায় আহত হন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছ। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে পুলিশী নির্যাতন ও গ্রেফতার আতংকে আহত বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যেতে পারছেননা বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করার উদ্দেশ্যে সকালে শহরের শায়েস্তানগর এলাকায় বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা জড়ো হন। সকাল ১১টায় নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে বের হতে চাইলে করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় নেতাকর্মীদের সাথে তাদের বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে তাকে আটক করে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে গেলেও পরে ছেড়ে দেয়। সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছুড়া গুলিতে বিজয় টিভির জেলা প্রতিনিধি ইলিয়াছ আলী মাসুকসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মাঝে জেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক মিয়া মো. ইলিয়াছ, ছাত্রদল সভাপতি এমদাদু হক ইমরান, সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমান, নূরুল হক, ইছা মিয়া, বাদশা মিয়া, আলী, আল আমিন, রাসেল, শাওন, সৈয়দ আশরাফ, মাহবুব, মুর্শেদ আলম সাজন, মোশাহিদ, খালেদ, হান্নান, জিবলু, জুয়েল, এমরানের পরিচয় পাওয়া গেছে। গ্রেফতার আতংকে আহতরা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হননি। তবে তারা গোপনে স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডাক্তারের চেম্বারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউবা আবার ঔষধের ফার্মেসীতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে শায়েস্তানগর এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র জি কে গউছ জানান, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সকালে বিক্ষোভ কর্মসূস পালন করতে নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হন। সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে নেতাকর্মীরা আসেন। কোন উত্তেজনা বা উস্কানি ছিলনা। প্রতিটি কর্মসূচিই শান্তিপূর্ণভাবে হবিগঞ্জে পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু (মঙ্গলবার) নেতাকর্মীরা যখন দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হচ্ছিলেন তখনই হঠাৎ পুলিশ আক্রমন চালায়। নেতাকর্মীদের উপর গুলি ছুড়তে থাকে। অন্তত ২শ’ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ। এখন চিকিৎসা নেয়ারও সুযোগ দিচ্ছেনা। নেতাকর্মীদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছে। জি কে গউছ অভিযোগ করেন, হামলার সময় এক পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ক্রস ফায়ার করার হুমকি দিয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিনুল হক জানান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছের নেতৃত্বে একটি মিছিল আসে। তারা এসেই পুলিশকে ঠেলা ধাক্কা দেয় এবং উদ্বত আচরণ শুরু করে। তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বার বার রাস্তায় না আসতে বলা হয়। কিন্তু তারা শুনেনি। দলবল নিয়ে রাস্তা এসে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তখন পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে ৫৪ রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের হামলায় এসআই মুসলেহ উদ্দিনসহ ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।