দক্ষ বেকারদের চাকুরী ব্যবস্থা

55

দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীকে চাকরি দেওয়ার জন্য পাবলিক সার্ভিস কমিশন প্রতিবছর বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন করে। একটি পরীক্ষা থেকে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে কয়েক বছর লেগে যায়। প্রতিবছর বিসিএস পরীক্ষায় লাখ লাখ প্রার্থী অংশগ্রহণ করে থাকে। তাদের মধ্য থেকে দুই-তিন হাজার প্রার্থী খুঁজে বের করতে হয়। জটিল এই কাজটি শেষ করার পরও কোটা পদ্ধতির কারণে তাদের নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করতে পারে না পিএসসি। বিসিএসে মুক্তিযোদ্ধা, মহিলা ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা রয়েছে। সাধারণ ক্যাডারে এসব কোটায় কোনো পদ খালি না থাকলেও কারিগরি ও পেশাগত ক্যাডারের ক্ষেত্রে কোটায় প্রাপ্য পদের চেয়ে কৃতকার্য প্রার্থীসংখ্যা কম থাকায় সব পদ পূরণ এসব কোটায় সম্ভব হয় না। কিন্তু সরকারের চাকরিসংক্রান্ত নীতির কারণে এসব পদে যোগ্য প্রার্থীরাও চাকরি পাচ্ছেন না। সরকারের নিয়মে রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে সেই পদ শূন্য থাকবে। এ কারণে প্রতিটি বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদ খালি থাকছে। ক্যাডার ও নন-ক্যাডার মিলিয়ে শূন্য পদের সংখ্যা এখন তিন লাখের বেশি ছাড়িয়ে গেছে। ৩৬তম বিসিএসে দুই হাজার ৩২৩ জনকে বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগের সুপারিশ করার পরও ৩৬৬টি পদ শূন্য রয়েছে। পদ খালি থাকায় সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের তদারকি যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি বেকারদের মধ্যে হতাশা দেখা দিচ্ছে। সরকারি চাকরিতে পদ পূরণের জন্য পিএসসি যে বিশাল কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করে আসছে, তা-ও ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া ২৮তম বিসিএস থেকে শুরু করে ৩৪তম বিসিএস পর্যন্ত সব বিসিএসেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পদ খালি রয়ে গেছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য পদ সংরক্ষণের শর্ত শিথিল করায় ৩৫তম বিসিএসে নন-ক্যাডারের সব পদ পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা কোটা সংরক্ষণের শর্ত তুলে দিয়ে ৩৬তম বিসিএস পরীক্ষার নন-ক্যাডার পদের জন্য অপেক্ষমাণ তিন হাজার ৩০৮ প্রার্থীর নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে পিএসসি।
কোটা সংরক্ষণ পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে বেকার রাখা যাবে না। দেশের উন্নয়নে তাদের কাজে লাগাতে হবে। কোটার ক্ষেত্রে যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে সে ক্ষেত্রে অপেক্ষমাণ যোগ্য প্রার্থীদের দিয়ে পদ পূরণ করতে হবে। তাতে শিক্ষিত বেকারদের যেমন কর্মসংস্থান হবে, তেমনি বছরের পর বছর কোনো পদ শূন্য পড়ে থাকবে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি ভেবে দেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।