প্রশ্ন ফাঁসের হোতাদের আটক করুন

29

অনেক চেষ্টা করেও চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধ করা সম্ভব হয়নি। ফাঁসকারীরা রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে যোগাযোগের আহ্বান জানানো হচ্ছিল ফেসবুক পেজে। শনিবার অভিযান চালিয়ে রাজধানী থেকে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত তিন ভাইসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই চক্রটি মূলত মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোতে গ্রুপ ওপেন করে অ্যাডমিন পরিচালনা করত। যেদিন যে পরীক্ষা হবে, সেই পরীক্ষার ভিত্তিতে গ্রুপ খোলা হতো। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত তিন ভাই চাঁদপুর থেকে ঢাকায় এসে প্রশ্ন ফাঁসের কারবারে জড়িত হয়। প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সঙ্গে মেডিক্যাল, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থীরা যেমন জড়িত, তেমনি স্কুলপড়ুয়া কিশোররাও এই চক্রের সঙ্গে জড়িয়েছে। আবার এমন একজনকে পাওয়া গেছে, যার শিক্ষাগত যোগ্যতা মাত্র নবম শ্রেণি। প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিয়েছিল। প্রশ্ন সংগ্রহ করে তারা তাদের ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে বিজ্ঞাপন দিয়ে তা বিক্রি করত। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, এই প্রশ্ন তারা পেত কোথায়? প্রশ্ন ফাঁস রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট গাফিলতি আছে, এমন সন্দেহের অবকাশ আছে। বিষয়টিও আলোচনার দাবি রাখে। গত ৪ ফেব্র“য়ারি প্রশ্ন ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁস খতিয়ে দেখতে মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিবকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু কমিটির আহ্বায়ক এই অফিস আদেশ হাতে পান এক সপ্তাহ পরে।
প্রশ্ন ফাঁস রোধ করতে হলে প্রথমেই কোথা থেকে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, তার মূলে হাত দিতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস রোধে ইন্টারনেট সেবা প্রায় বন্ধ করে দেওয়ার মতো হঠকারী সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত সরকারের জনপ্রিয়তা নষ্ট করার জন্যই যে নেওয়া হয়েছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ভয়ংকর সব তথ্য পাওয়া গেছে। প্রশ্ন ফাঁসে ব্যবহৃত ৩০০ মোবাইল ফোন নম্বর চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব ফোনের মালিককে গ্রেপ্তার করতে পারলে অবশ্যই প্রশ্ন ফাঁস রোধ সম্ভব। এদের দ্রুত বিচার করে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।