পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে খালেদা জিয়া

18

কাজিরবাজার ডেস্ক :
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়ার পর তাকে নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিকাল সোয়া তিনটার দিকে বিপুল পুলিশ প্রহরায় খালেদা জিয়াকে সেখানে নিয়ে যাওয়া যাওয়া হয়।
খালেদা জিয়াকে ওই পরিত্যক্ত কারাগারের শিশু ডে কেয়ারের পাশের একটি কক্ষে রাখা হবে বলে জানা গেছে। মহিলা কয়েদিদের বাচ্চাদের জন্য এই ডে কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়।
কারাগারে খালেদা জিয়া উচ্চ প্রথম শ্রেণির মর‌্যাদা পাবেন বলে জানান তার আইনজীবী।
রায়ের পর সবিচালয়ে দেয়া এক প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হচ্ছে।
এটি স্থায়ী বন্দোবস্ত কি না, বা খালেদা জিয়াকে এখান থেকে পরে অন্যত্র নেয়ার কোনো সম্ভবনা আছে কি না-এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো কিছু পার্মানেন্ট না, যে কোনো সময় যে কোনো ডিসিশন হতে পারে। আমরা এখন তাকে এখানে রাখছি, পরে অন্য পরিস্থিতি হলে তাকে সরিয়ে অন্য কোথাও নিতে পারি।
রায় ঘোষণার পর বিপুল পুলিশের পাহারায় খালেদা জিয়াকে নাজিম উদ্দিন রোডে অবস্থিত পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে নেয়া হয়।
৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়া এর আগে একবারই কারাগারে যান। তবে সেটি ছিল সংসদ ভবনের পাশে এমপি হোস্টেলে বিশেষ কারাগার। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি গ্রেপ্তার হন। তাকে সংসদ ভবন এলাকার স্থাপন করা বিশেষ কারাগারে রাখা হয়। পাশাপাশি আরেকটি ভবনে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের আদেশে মুক্ত হন খালেদা জিয়া।
১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি প্রাথমিক সদস্য হিসেবে বিএনপিতে যোগ দেন খালেদা জিয়া। এরপর তিনবার পুলিশ তাকে আটক করে। তবে তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়নি। এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ১৯৮৩ সালের ২৮ নভেম্বর, ১৯৮৪ সালের ৩ মে, ১৯৮৭ সালের ১১ নভেম্বর আটক হন তিনি। এর মধ্যে প্রথম দুবার ঘটনাস্থল থেকে আটক করে তাকে বাসায় পৌঁছে দেয় পুলিশ। ১৯৮৭ সালে হোটেল পূর্বাণীতে এক অনুষ্ঠান থেকে আটক করে আরও কয়েকজন নেতার সঙ্গে তাঁকে কিছু সময় মতিঝিল থানায় নেওয়া হয়। অবশ্য পুলিশ সে সময় তাকে গ্রেপ্তার বা আটকের বিষয়ে কোনো কিছু বলেনি। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অঘোষিতভাবে তাকে গৃহবন্দী থাকতে হয়েছে। তবে এটা আইনানুগ নয়।
বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সময় ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর গুলশানের বাসায় অবরুদ্ধ করা হয় তাঁকে। আর ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি তাঁর গুলশানের কার্যালয়ের দুই পাশে বালুর ট্রাক রেখে অবরুদ্ধ করা হয়। ৯৩ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে আদালতে হাজিরা দিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি।