বিশ্বনাথে দুই সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

35

বিশ্বনাথ থেকে সংবাদদাতা :
বিশ্বনাথে মায়ের বিরুদ্ধে ‘তিন বছর বয়সী নাহিদুল ইসলাম মারুয়ান ও ১৮ মাস বয়সী ওয়াহিদুল ইসলাম রুমান’ নামের ২ শিশু পুত্রকে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের কোনাউড়া-নোয়াগাঁও গ্রামে মঙ্গলবার বিকাল আনুমানিক ৩টার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে। নিহতরা কৃষক কবির আলী ও রনি বেগম ওরফে বিউটি আক্তার রনি দম্পতির সন্তান।
ছেলেদের হত্যা করার পর মা রনি ডেটল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অতপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে থানা পুলিশ আহত অবস্থায় সেই মাকে (রনি) উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে। আর জিজ্ঞাসাবাদের নিহতদের পিতা কবির আলীকে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বসত ঘরের অব্যবহৃত একটি বাতরুমে দুটি বড় বালতির মধ্যে পানি নিয়ে তাতে ডুবিয়ে (চুবিয়ে) নাহিদুল ও ওয়াহিদুলকে হত্যা করেছেন তাদেরই গর্ভধারীনী মা রনি বেগম ওরফে বিউটি আক্তার রনি। এরপর মঙ্গলবার ৩টার দিকে কৃষি ক্ষেত্র থেকে খাবারের জন্য ঘরে এসে স্ত্রী-সন্তানকে দেখতে না পেয়ে অব্যবহৃত ওই ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে বাতরুম থেকে দুই সন্তানের লাশ উদ্ধার করেছেন পিতা কবির আলী। নিহতদের মা রনি বেগম ছোট ছেলের লাশের পাশে বসা ছিল। এসময় পৃথক দুই বালতির মধ্যে দু’সন্তারের পা উরের দিকে ও মাথা নিচের দিকে দেখতে পান কবির আলী। নাহিদুলকে ২০ লিটারী বালতির মধ্যে ডুবিয়ে বালতির ঢাকনা দিয়ে তার উপর এক কলস ভর্তি পানি রাখা হয়। আর ওয়াহিদুলকে ১৫ লিটারী বালতির মধ্যে ডুবিয়ে বালতির ঢাকনা দেওয়া হয়।
এব্যাপারে নিহতদের পিতা কবির আলী বলেন, সকাল বেলা দুই ছেলেকে সুস্থ অবস্থায় রেখে কৃষি কাজের জন্য ক্ষেত্রে যাই। দুপুর বেলা খেতে আসি। অন্যান্য দিন আমি বাড়িতে আসার সাথে সাথে ছেলেরা আমাকে ঘিরে ধরে। (মঙ্গলবার) স্ত্রীসহ তাদেরকে দেখতে না পেরে তাদেরকে খুঁজতে থাকি। ছাদের উপর’সহ সব রুমে খোঁজাখুঁজির পর অব্যবহৃত ঘরের দিকে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি সেই রুমের দরজা ভিতর থেকে আটকানো রয়েছে। এরপর শাবল দিয়ে ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পাই দুইটি পৃথক বালতির মধ্যে আমার দুই ছেলের পাগুলো উপরের দিকে, আর মাথা নিচের দিকে লাশ রয়েছে। ছোট ছেলের লাশ থাকা বালতির পাশে আমার স্ত্রী (রনি) বসে আছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার চমক আলী বলেন, এলাকাবাসী ধারণা মা তার দুই সন্তানকে বালতিতে পানি নিয়ে ডুবিয়ে (চুবিয়ে) তাদেরকে হত্যা করেছে। আর সন্তানদের হত্যা করে নিজেও আতœহত্যা করার চেষ্ঠা করে। কিšুÍ পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।
দুই শিশু সন্তানের মৃত্যুর ও তাদের পিতাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের হেফাজতে রাখার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দোহা বলেন, লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে। আহত অবস্থায় মাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে মনে হচ্ছে মা নিজের দুই শিশু পুত্রকে বসত ঘরের বাতরুমে বালতির মধ্যে পানিতে ডুবিয়ে (চুবিয়ে) হত্যা করেছে।