হোটেল মেহেরপুরে উদ্ধার হওয়া লাশ দু’টি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর

46

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর সোবহানীঘাটের মেহেরপুর আবাসিক হোটেল থেকে প্রেমিক-প্রেমিকার উদ্ধার হওয়া লাশ দু’টি স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ময়না তদন্ত শেষে নিহতদের লাশ দু’টি নিজ নিজ আত্মীয় স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেছেন হোটেল ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদ। হস্তান্তর হওয়া লাশ দু’টি হচ্ছে- জৈন্তাপুরের ব্র্যাক স্কুলের শিক্ষিকা রুমি পাল (২৫) এবং রূপচাঁদা কোম্পানীর এসআরও হিসাবে কর্র্মরত ও জগন্নাপুরের মিন্টু দেব (২৮)।
গত রবিবার রাত ১০ টার দিকে কোতোয়ালী থানা পুলিশ মেহেরপুর হোটেলের দ্বিতীয় তলার ২০৬ নম্বর কক্ষের তালা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় মিন্টু দেব আর বিছানার ওপর থেকে রুমি পালের লাশ উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌছুল হোসেন জানান, লাশ দুটি ময়না তদন্তের পর গতকাল সোমবার বিকেলে নিজ নিজ আত্মীয় স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সন্দেহাতীতভাবে আটক হওয়া হোটেলের ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদকে মুছলেকার মধ্যমে ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ম্যানেজার আব্দুল ওয়াদুদ বাদি হয়ে কোতোয়ালী থানায় এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করেন। তবে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে বলে জানান ওসি।
মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, নিহতদের কক্ষে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে। ওই নোটের নামের সাথে হোটেল কক্ষ ভাড়া নেওয়া নামের মিল নেই। সুইসাইডাল নোটে আত্মহত্যার কথা লেখা রয়েছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ছেলের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। আর মেয়েকে সম্ভবত শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে। তার গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
আত্মহননকারী মিন্টুর অজানা তথ্য: আত্মহননকারী মিন্টু দেব সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার আগে সে গত শনিবার দিবাগত রাতে জগন্নাথপুর পৌর এলাকার বাপন নামের একজনকে কুপিয়ে আহত করে। বর্তমানে বাপন চিকিৎসাধীন রয়েছে ওসমানী হাসপাতালে। বাপনকে আহত করার পর মিন্টু চলে আসে সিলেটে। খবর দিয়ে তার কথিত প্রেমিকা রুমি পালকেও সিলেটে নিয়ে আসে।
জগন্নাথপুরের স্থানীয় একটি সূত্র জানায়, রুপচাঁদা কোম্পানীর এসআরও হিসাবে কর্মরত ছিল মিন্টু। দরিদ্র পরিবারের সন্তান মিন্টুর বাড়ি জগন্নাথপুর পৌর এলাকার জগন্নাথ বাড়িতে। তারা দুই ভাই ও দুই বোন। এর মধ্যে এক বোন ৬/৭ বছর আগে মারা গেছে। জৈন্তাপুরের নিজপাট গ্রামে রুমি পালের বাড়ি হলেও জগন্নাথপুরে তাদের স্বজন রয়েছে। মিন্টুর সম্পর্কে রুমি মাসতুতো (খালাতো) বোন। সেখানে যাওয়া-আসার সুবাদে রুমির সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে। রুমি জৈন্তাপুরের ব্র্যাক স্কুলে চাকুরি করতেন। একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি রুমি পালের বিয়ে ঠিক হয়। প্রেমিক হিসাবে মিন্টু এটি মেনে নিতে পারেনি।
হোটেল সূত্র জানায়, গত রবিবার মিন্টু ও রুমি স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা মেহেরপুর হোটেলের ২০৬ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেয়। রাত ১০ টায় পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে।