সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় বাঁধ পরিদর্শনকালে পানি সম্পদমন্ত্রী ॥ আর যেন বাঁধ ভেঙ্গে হাওরের ফসল তলিয়ে না যায়

46

নিজাম নুর জামালগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে পানি সম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সুনামগঞ্জের হাওর রক্ষা বাঁধ দেখতে এসেছি। বাঁধ নির্মাণ কাজে কোন অনিয়ম হলে সরাসরি আমাকে জানাতে পারেন, আমরা হাওর রক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়ম-গাফিলতি সহ্য করবো না। বাঁধ নির্মাণে যতটুকু কঠোর হওয়ার প্রয়োজন আমি ততটুকুই হব।’ মন্ত্রী বলেন গত বছর হাওরের ফসল বাঁধের কারণে তলিয়ে গেছে, আর যেন বাঁধ ভেঙ্গে কৃষকের ফসল তলিয়ে না যায়।’
শনিবার দুপুরে জামালগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ পরির্দশনকালে তিনি একথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বর্ষাকালে হাওরে যে পানি আসে তা থেকে সৃষ্ট বন্যায় ফসল নষ্ট হয়। গত বছর বাঁধের কাজে পুকুর চুরি করায় বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে হাওরের ফসল তলিয়ে যায়, ফলে ভোগান্তিতে পরে এ এলাকার কৃষককুল, আমি কাজটি মন্ত্রণালয়ে বসেও করতে পারতাম।
এখানে এসে দেখে গেলাম যে সমস্যাটা কী, কেন ফসল নষ্ট হয়, পানি কোথা থেকে আসে। এখানে খাল কাটা শুরু হয়েছে। পানি সম্পদমন্ত্রী শনিবার স্পিডবোটে করে জামালগঞ্জ উপজেলার পাগনার হাওর, গজারিয়া ক্লোজার, হালির হাওরের লক্ষ্মীপুর ক্লোজার পরিদর্শন করেন।
এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, অতিরিক্ত সচিব মো. ইউসুফ, বিশ্বনাথা-বালাগঞ্জে এমপি-এহিয়া চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এমরান হোসেন, পুলিশ সুপার বরকততুল্লা খান, জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শামীম আল ইমরান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ভুইয়া, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, ইউপি চেয়ারম্যান করুনাসিন্ধু তালুকদার, রজব আলী, অসিম তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শুক্রবার রাত ১১টায় সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউসে পাউবো কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন, কৃষক প্রতিনিধি ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ‘সুনামগঞ্জের হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ দেখভাল করার জন্য টাস্কফোর্স করা যায় কিনা, সেটি প্রধানমন্ত্রীকে প্রস্তাব দেব।’
তিনি বলেন, ‘আমার সুস্পষ্ট বক্তব্য আমি কাজ চাই, প্রয়োজনে সমস্ত মন্ত্রণালয় এখানে নিয়ে আসবো। তিন মাসে তিনবার সুনামগঞ্জে আসবো।’ মন্ত্রী ৮১৫টি পিআইসি’র কাজের মধ্যে ১৩০টির কাজ শুরু হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছরের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। আমরা সেটি দেখতে চাই না। আবার ফসল যেন নষ্ট না হয়। আপনারা এক্সপার্ট, আপনারা যদি না পারেন, তাহলে গো-মোর এক্সপার্ট।’ তিনি বলেন,‘যারা পারবেন না, তাঁদের বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানাবো। গত বছরে দৈবচক্রে ঘটনা ঘটেছে বলা হয়েছে, কিন্তু গালি শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীরা।’
মতবিনিময় সভায় কথা প্রসঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রী আরও বলেন,‘আমি যেসব অফিসারদের নিয়ে কাজ করি, তাঁদের অনেকেই জামায়াতের লোক। তারা চায় সরকার ব্যর্থ হোক। কিন্তু আমি সেটা হতে দেব না।’
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এমরান হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান। অতিথির বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমদ খান।
এছাড়াও বক্তব্য দেন দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান, আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজুর রহমান সিরাজ প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ্, সংসদ সদস্য ইয়াহিয়া চৌধুরী, সংসদ সদস্য অ্যাড. শামছুন নাহার বেগম শাহানা, পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান, সুনামগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভূঁইয়াসহ পাউবো’র
ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও জেলা সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।