কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন আতঙ্কে সুনামগঞ্জের শতাধিক গ্রামের মানুষ

18

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিনরাত পার করছে হবিগঞ্জ ও পার্শ্ববর্তী জেলা সুনামগঞ্জের শতাধিক গ্রামের বাসিন্দা। প্রতিদিন নদী ভাঙ্গনের ফলে অনেকের দরজার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে কুশিয়ারা।
জানা যায়, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এসে মিলিত হয়েছে কুশিয়ারা ও কালনী নদী। উজান দিক কুশিয়ারা, আর ভাটির দিক কালনী। আজমিরীগঞ্জ থেকে শুরু হওয়া কুশিয়ারা নদীর পাশে অন্তত দুই শতাধিক গ্রাম রয়েছে। আর এসব গ্রামগুলো হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার অন্তর্গত।
সরেজমিনে দেখা যায়, কুশিয়ারা নদীর ভাঙন প্রতিদিন দুই থেকে তিন ফুট করে বাড়ছে। ইতোমধ্যে শতাধিক বাড়ি ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের শিকার হয়ে বিপাকে পড়েছেন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হওয়া মানুষগুলো। অনেকেই নিজের আত্মীয়ের বাড়িতে আবার কেউ জায়গা করে নিয়েছেন সরকারের খাস জমিতে।
হিলালপুর গ্রামের রাসেল মিয়া বলেন, আমাদের বাড়ি ছিল পিরিজপুর গ্রামে। কয়েক বছরে সেখানে অন্তত ৩০টি পরিবারের বাড়িঘর নদীতে ভেঙে পড়েছে। ভাঙনের শিকার হওয়া মানুষগুলো নিরুপায় হয়ে সরকারের খাস জমিতে জায়গা নিয়েছেন। সেখানে নতুন একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যার নাম দেওয়া হয়েছে হিলালপুর।
পিরিজপুর গ্রামের জবেদা খাতুন বলেন, আমার স্বামী ও দুই ছেলে দিনমজুরের কাজ করে মানুষের কৃষিজমিতে। নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এর মাঝে নদী যেভাবে বাড়িঘর নিয়ে যাচ্ছে, আমরা কোথায় গিয়ে উঠবো ভাবতে পারছি না।
হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমএল সৈকত জানান, কুশিয়ারা নদীর হবিগঞ্জ জেলা অংশের অসংখ্য গ্রাম নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ইতোমধ্যে ১০টি স্পট পরিদর্শন করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ডিজিাইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। তবে প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণ অনেক ব্যয়বহুল, তাই কাজ করতে সময় লাগবে। ৫০০ মিটার জায়গায় প্রতিরক্ষা দেয়াল নির্মাণে ১৩ থেকে ১৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে।
আজমিরীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পুলক কান্তি চক্রবর্তী বলেন, নদীর পারে অবস্থিত অনেক গ্রামের মসজিদ-মন্দিরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙনের কবলে পড়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।