জেলা প্রশাসক বরাবরে এলাকাবাসীর অভিযোগ ॥ শিলং তীর জুয়া’র এজেন্ট ও দালালরা রাষ্ট্রদ্রোহী

64

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ‘শিলং তীর জুয়া’র নামে দেশ থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা। একদিকে এদেশীয় অভিবাসীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে বিদেশ থেকে রেমিটেন্স পাঠিয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়িয়ে তুলছেন। অপরদিকে আরেক শ্রেণীর ধোঁকাবাজ-প্রতারক ও দালালদের খপ্পরে পড়ে কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা দেদারসে বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। কারণ ‘শিলং তীর জুয়া’র মূল হোতা ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং-এ। সেখান থেকেই এসবের গডফাদাররা এ খেলা নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে আর নিজেদের নিয়োগকৃত এজেন্টদের মাধ্যমে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে লুটেপুটে নিয়ে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা।
দুষ্টচক্রের অপতৎপরতায় প্রতারণার শিকার হচ্ছে এদেশের সহজ-সরল দিনমজুর শ্রেণীর মানুষ। ধ্বংস হচ্ছে যুব ও তরুণ সমাজ। একইভাবে প্রলুব্দ হয়ে অনেক গৃহবধুও জড়িয়ে পড়ছে এই অপকর্মে। ‘শিলং তীর’র অভিশাপে অনেককে ভিটে-বাড়ি পর্যন্তও বিক্রি করতে হচ্ছে। লোভে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছে দিনমজুর, গরীব আর সাধারণ মানুষ। এ অবস্থা চলতে থাকলে দেশে বিশেষ করে সিলেট অঞ্চলে সামাজিক ধ্বস নামবে এবং এর পরিণতি হতে পারে অত্যন্ত মারাত্মক। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে অবিলম্বে চরম ঘৃণিত এবং অভিশপ্ত এই ‘শিলং তীর জুয়া’র স্থানীয় এজেন্টদের গ্রেফতার এবং তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহসহ মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। গত ৯ জানুয়ারি সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবরে নগরীর ২৬নং ওয়ার্ডস্থ টেকনিক্যাল রোড সাধুরবাজারের বাসিন্দা আব্দুল হাসিমের ছেলে মোঃ আব্দুল করিম এক অভিযোগপত্রে এ দাবি জানান। দরখাস্তের অনুলিপি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী, পুলিশের আইজি এবং র‌্যাব-৯-এর কমান্ডিং অফিসার বরাবরে পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, গণধিকৃত এই ‘শিলং তীর জুয়া’র স্থানীয় এজেন্টদের গ্রেফতারে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী বার বার অভিযান চালালেও কার্যত এদের দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। আবার কোন কোন সময় পুলিশ বা র‌্যাব প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করতে না পেরে আশপাশ থেকে পথচারী বা নিরীহ লোকসহ অনেককে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে, যারা প্রকৃতপক্ষে দোষী নয়। তাই সুষ্টু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত এজেন্ট ও দালালদের গ্রেফতার করে আত্মঘাতি এই অপকর্মের মূলোৎপাটনে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানানো হয়।