সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে শৈত্য প্রবাহের প্রকোপ বাড়ছে

38

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে পৌষ মাসের প্রথমদিকে শীতের হালকা পরশ পওয়া গেলেও গত কয়েক দিন ধরে শৈত্য প্রবাহ বেড়েই চলছে। সূর্যের দেখা কিছুটা মিললেও কুয়াশার চাদরে ডাকা থাকে সারা দিন।
হাওরাঞ্চলে ঠান্ডার কারনে বোরো জমিতে চারা রোপন ও অন্যান্য কাজে দিন মজুর হতদরিদ্ররা নিজ নিজ কাজে যেতে পারছে না। ফলে হাওর অঞ্চলের কর্মজীবি খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুয়ের জীবন যাত্রা দুর্বিষহ হয়ে পরছে। জানাযায়,হাওরাঞ্চলে মানুষকে গত কয়েক বছর ধরেই বোরো ফসল হানীর ধকল সইতে হয়েছে। ফসল হারিয়ে এখন নিঃস্ব কৃষক আর কর্মসংস্থান হারিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষ।
শীতের প্রস্তুতি না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় চরম দূর্ভোগে আছে হাওরাঞ্চল বাসী। ভোর থেকে বেলা ১১-১২টা পর্যন্ত কুয়াশার ডাকা থাকে চারপাশ। কোন কোন দিন সারাদিনেই কুযাশা ও সেই সাথে ঠান্ডা বাতাশ প্রবাহিত হওয়ার কারনে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরছে। তীব্র শীত ও ঠান্ডা বাতাশ,কুয়াশার ছাঁদরে ডাকা পড়েছে জেলার হাওর আঞ্চল ও সীমান্ত এলাকা রাস্তা-ঘাট।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সদরসহ সীমান্ত এলাকা বাগলী, চারাগাঁও, বীরেন্দ্র নগর, বড়ছড়া, চাঁনপুর, লাউড়েরগড় সীমান্ত এলাকায় শীতের তীব্রতা বেড়েছে। দেখা গেছে গরীব অভাবী মানুষজন শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
আরো জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা সীমান্ত এলাকা হওয়ার কারণে তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, বিশ্বাম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ ১১টি উপজেলায় শীত বাড়ছে।
যার ফলে ঐসব এলাকার ছিন্নমূল মানুয়ের ভোগান্তির শেষ নেই। শৈত্য প্রবাহের কারণে জেলা সদর হাসপাতাল ও জেলার ১১টি উপজেলা হাসপাতাল ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলোতে শীত জনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়াসহ সর্দি, কাশি, জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। বৃদ্ধরাও ঠান্ডা জনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়-শীতের তীব্রতা যতই বৃদ্ধি পাচ্ছে হাসপাতাল গুলোতে শীত জনিত রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাহিরপুর উপজেলার স্থানীয় বাসিন্দা সাদেক আলী বলেন, এ উপজেলায় শীত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কয়েক বছর ধরে কৃষকের একমাত্র সম্পদ বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কৃষক নিঃস্ব, অসহায় দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষের শীত নিবারণের জন্য শীত বস্ত্র প্রয়োজন।
উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত এলাকা বীরেন্দ্র নগড় কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরত সি,এইচ,সি,পি নরোত্তম পাল পল্টু জানান, শীত বাড়ছে ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যাও বাড়বে।
তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন বলেন, কয়েক দিন ধরেই শীতের পরিমান বাড়ছে এতে করে টান্ড জনিত রোগের সংখ্যা বেড়ে যাবে।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পুনেন্দ্র দেব জানান, শীতের পরিমাণ বাড়ার কারণে এ উপজেলায় শীত বস্ত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কেও দিচ্ছি এছাড়াও ৭টি ইউনিয়নে ইউনিয়নে শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণের জন্য ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ইউনিয়ন শীতবস্ত্র পাঠানো হয়েছে।