দক্ষিণ সুরমায় ফুটপাত দখল মুক্ত না হওয়ায় যানজট

27

স্টাফ রিপোর্টার :
দক্ষিণ সুরমায় হকার দখল মুক্ত না হওয়ায় দিন দিন যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে। উত্তর সুরমার ফুটপাত হকার দখলকারীদের বিরুদ্ধে মামলা, নগরপিতার সাঁড়াশি অভিযানে নগরীর ফুটপাত অনেকটা দখল মুক্ত। সম্প্রতি নগরী জুড়ে সিলেট সিটি কর্পোরেশন থেকে মাইকিং করানো হয় ফুটপাত পুরোপুরিভাবে দখল মুক্ত রাখতে। নগরীর আওতাধীন দক্ষিণ সুরমায়ও রাস্তা থেকে অবৈধ স্থাপনা সরাতে বারবার মাইকিং করা হয়। কড়া সতর্ক বাণী দেয়ার পরও হকারদের কবলে রয়ে গেছে ফুটপাত।
নতুন করে উত্তর সুরমার ভাসমান ব্যবসায়ীদের উৎপাত দক্ষিণ সুরমায় বেড়ে যেতে দেখা গেছে। কীন ব্রীজের গোড়া থেকে রেলগেইট হয়ে মারকাজ পয়েন্ট। কদমতলী থেকে শিববাড়ী পয়েন্ট পর্যন্ত, বঙ্গবীর রোড, মারকাজ পয়েন্ট থেকে কাজিরবাজার সেতুর দক্ষিণ প্রান্ত, রেলগেইট থেকে কীন ব্রীজ ও হুমায়ূন রশিদ চত্বর থেকে আবার কীন ব্রীজ পর্যন্ত যানজট এখন দক্ষিণ সুরমাবাসীর গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরকারি হাসপাতালসহ উত্তর সুরমায় বিভিন্ন ক্লিনিক বা ডাক্তারের কাছে যেতে দক্ষিণ সুরমাবাসী কাজিরবাজার সেতুই বেশি ব্যবহার করেন। যানজটে রোগী ও লাশবাহী গাড়িও দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। যদিও অনেকে মারকাজ পয়েন্টে সার্বক্ষণিক ট্রাফিক পুলিশ থাকার প্রয়োজন মনে করেন। ২৫, ২৬নং ওয়ার্ডের যানজট সমস্যা নিয়ে ইতি মধ্যে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা হয়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের উপর কাঁচা বাজার বসিয়ে যানজট সৃষ্টি করে রেখেছে ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। এদিকে রেলগেইট থেকে নছিবা খাতুন বিদ্যালয় মুখী লিংক রোডসহ কাঠ ব্যবসায়ীরা রাস্তার উপর যত্রতত্র কাঠ রাখায় সড়ক ছোট হয়ে যেতে দেখা যায়। এ অবস্থায় রেলগেইট দিয়ে দিনে কয়েক বার ট্রেন সালটিং এর ফলে এ এলাকায় তীব্র যানজট দেখা দিলেও রাস্তার উপরে গড়ে উঠা হাট-বাজারের দোকানিরা দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। উল্টে কেউ কিছু বললে বা কোন যানবাহনের সাথে দোকানিদের কোন কিছুতে লাগলে তারা মারমুখী হয়ে উত্তপ্ত কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে পথচারীদের সাথে ঝগড়াও বাঁধে।
অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুটপাত দখলকারীদের শক্তির মূল উৎস দক্ষিণ সুরমা ফাঁড়ি পুলিশ। প্রতিদিন পুলিশকে চাঁদা দিয়ে চলছে ফুটপাতে রমরমা ব্যবসা। রেলগেইটে ফুটপাথ থেকে এই এলাকায় কতিপয় কয়েকজন প্রতিদিনের চাঁদা কালেকশন করে পুলিশের এক সদস্যের কাছে পৌছে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর যথেষ্ট আন্তরিকতায় ও লাগাতার অভিযানে নগরীর ফুটপাত অনেকটা দখল মুক্ত। নগরীর আওতাভুক্ত দক্ষিণ সুরমা এলাকায় মেয়রের সাঁড়াশী অভিযান অত্যন্ত প্রয়োজন বলে পথচারী ও এলাকাবসী মনে করেন।
এ ব্যাপারে ২৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তাকবির ইসলাম পিন্টু বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে মারকাজ পয়েন্টে সার্বক্ষণিক দু’জন ট্রাফিক পুলিশ অত্যন্ত জরুরী। তারা আশ্বাস দিলেও কবে তা কার্যকর হবে তা নিয়ে তিনি নিজেও চিন্তিত।
সড়কের উপর কাঁচাবাজার ও ফলেরবাজার বসিয়ে যানজট সৃষ্টির ব্যাপারে ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রোটারিয়ান তৌফিক বকস লিপন বলেন, ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা পরিষ্কার করতে মেয়র সাহেবকে নিয়ে শীঘ্রই অভিযান দেয়া হবে এবং ফুটপাত দখলকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব জানান, সর্বসাধারণের জনসচেতনতা আরো প্রয়োজন রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পুলিশের জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া গেলে তার বিহিত ব্যবস্থা নেয়া হবে।