গোলাপগঞ্জে দিপু হত্যাকান্ড ॥ আপন চাচাসহ আটক ২, চাচাতো ভাই’র ঘর থেকে রক্তমাখা জামা ও সু উদ্ধার

43

সেলিম হাসান কাওছার গোলাপগঞ্জ থেকে :
গোলাপগঞ্জে তরুণ টেলিকম ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমদ দিপু হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের আপন চাচা অপুল মিয়া (৫৫) সহ আরো দুই’জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সোমবার রাত সাড়ে ৭টায় নিহতের চাচাকে বাড়ী থেকে আটক করে। এ সময় আটককৃত অপুল মিয়ার ঘর থেকে পুলিশ অপুল মিয়ার রক্তমাখা শার্ট ও লুঙ্গি উদ্ধার করে এবং অপুল মিয়ার ছেলে অনিকের রক্তমাখা সু-উদ্ধার করে। এছাড়া আরো কিছু আলামত জব্দ করে পুলিশ। এদিকে এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে গোলাপগঞ্জ পৌরসভার রণকেলী গ্রামের ছানি নামে আরো একজনকে আটক করেছে পুলিশ। নিহত দিপুর লাশের ময়না তদন্ত শেষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টা ১৫মিনিটে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। নিহতের মামা এমাদুল ইসলাম জানান, পুলিশ দিপুর লাশ বুঝিয়ে দেয়ার পর গোসল করিয়ে সিলেটের একটি হিমঘরে রাখা হয়েছে। তার বাবা সৌদি প্রবাসী আজ বুধবার দেশে আসবেন। দেশে আসার পর তার জানাযা অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল মঙ্গলবার অনুর মিয়া (৪৫) নামে নিহতের এক চাচা বিকাল ৫টায় ঢাকা শাহজালাল এয়ারপোর্টের একটি ফ্লাইটে স্পেন থেকে দেশে পৌছান। এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা হয়নি। নিহতের বাবা দেশে পৌছার পর থানায় হত্যা মামলার এজাহার দাখিল করা হবে।
উল্লেখ্য গত বরিবার নিহত দিপু রবিবার প্রতিদিনের মত দোকানের উদ্দেশ্য বাড়ী থেকে বের হয়। আর বাড়ী ফিরেনি। সোমবার সকালে বাড়ীর প্রায় ৫শ গজ দূরের দিঘির পারে তার রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় এক গরু রাখাল। পরে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ দিপুর আপন চাচাতো ভাই অনিক আহমদ (২৩) ও একই গ্রামের দিপুর বন্ধু লায়েক আহমদ (২৪) কে সন্দেহজনক ভাবে আটক করে। তাদের অনেক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অনিকের বাবা অপুল মিয়াকে বিভিন্ন আলামতসহ আটক করে পুলিশ। এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসেরের সাথে আলাপ করা হলে তিনি রক্তমাখা জামা ও নিহত দিপুর চাচাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অনেক আলামত উদ্ধার করা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে এখন বলা যাচ্ছে না। এদিকে এখনও দিপুর মা ছালমা বেগমের কান্না থামছে না। কারো কাছে কান্না থামানোর ভাষাও নেই। হুঁ হুঁ করে কাঁদছেন আর এক মাত্র ছেলের জন্য আহাজারি করছেন। গতকাল নিহতের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য। হাউ মাউ করে কাঁদছে স্বজনরাও।