কমলগঞ্জে অচেনা বন্যপ্রাণীর আক্রমণে আহত ৯, আতঙ্কিত এলাকাবাসী

37

মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে লোকালয়ে এসে অচেনা এক বন্যপ্রাণী মানুষ ও গৃহপালিত পশুপাখির ওপর আক্রমণ করছে। এতে ২ দিনে প্রাণীটির আক্রমণে ৯ জন আহত হয়েছেন। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেল থেকে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের কালেঙ্গা ও দিঘলগাজী গ্রামে এই প্রাণীটির দেখা মিলেছে। এলাকাবাসীর ধারণা প্রাণীটি একটি মেছবাঘ। তবে বনবিভাগ বলছে এটি মেছোবাঘ নয়, অন্য কোনো মাংসাশী প্রাণী।
রোববার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, মানুষ ও গৃহপালিত পশুপাখির ওপর আক্রমণ করায় অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেছেন এলাকাবাসী। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষ দিনের বেলায় লাঠিসোটা হাতে নিয়ে চলাফেরা করছেন। সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। অজ্ঞাত প্রাণীর ভয়ে কয়েক বাড়ির লোকজন জড়ো হয়ে সময় পার করছেন। এই বুঝি আক্রমণ করবে কাউকে।
এদিকে দুই দিনে এই প্রাণীর আক্রমণে ৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তারা হলেন-তাওহিদ মিয়া (২০), রাজু মিয়া (২২), আরিফ মিয়া (১৪), শরিফ আহমদ (১৮), পারুল বেগম (৩৫), মনহর মিয়া (৪০), আঙ্গুর মিয়া (২২), জাহেদ মিয়া (২১) ও স্বপন মিয়া (১২)। তাদের সবাইকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে হঠাৎ প্রাণীটি লোকালয়ে চলে আসে এবং প্রথমে মাঠে একটি গরু ও একটি ছাগলের ওপর আক্রমণ করে। পরে এলাকার বিভিন্ন স্থানে চলাচলকারী মানুষের ওপর আক্রমণ করে।
প্রাণীটির আক্রমণের শিকার তাওহিদ মিয়া বলেন, এরকম বন্যপ্রাণী এর আগে আমরা দেখিনি। সে হঠাৎ পেছন থেকে আক্রমণ চালায়। আনুমানিক ৩ ফুট উচ্চতা, ধূসর রং ও লেজ লম্বা অনেকটা শিয়ালের মত। তবে শিয়াল নয়। তার মুখটা গোলাকার।
বন্যপ্রাণী গবেষক তানিয়া খান বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অনেক ধরনের প্রাণীর ছবি মানুষদের দেখালাম তারা কেউ মিলাতে পারছেন না। সেটি বন্য কুকুর বা শেয়াল হতে পারে।
না দেখা পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যাবে না। তবে এই প্রাণীর জন্য বনের অন্য প্রাণীরা বিপদে পড়েছে। আতঙ্কিত মানুষ যে প্রাণী সামনে পাচ্ছে তাকেই ধাওয়া করছে। এতে প্রাণীকুলের আবাসন সংকট দেখা দিতে পারে।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় কর্মকর্তা মিহির কুমার দে বলেন, প্রাণীটি সম্পর্কে এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। আমরা আক্রমণের শিকার লোকদের সঙ্গে কথা বলেছি। বন কর্মীদের টহলে রেখেছি প্রাণীটি শনাক্ত করতে। সেটি আটক করার জন্য একটি খাঁচাও তৈরি করা হয়েছে। যথাসম্ভব সেটিকে আটকের চেষ্টা চলছে।