রংপুর সিটি নির্বাচন ॥ আজ ভোট, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে বাড়তি নিরাপত্তা

39

কাজিরবাজার ডেস্ক :
রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মঙ্গলবার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। আজ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে ১৯৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০৮টি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে চারস্তরের নিরাপত্তাসহ নগরজুড়ে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। এদিকে শেষ সময়ের প্রচারণায় গতকাল ব্যস্ত ছিলেন মেয়রপ্রার্থী ও সমর্থকরা। পাড়া-মহল্লা, অলি-গলিতে প্রচারণা চালান তারা।
গতকাল খুব সকালেই নগরীর রণচন্ডি এলাকায় প্রচারণায় যান জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। আর দুপুরে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে নগরীর কাছারি বাজার এলাকায় ভোট চান জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের। নগরীর সিটি বাজার পায়রা চত্বর এলাকায় প্রচারণা চালান আওয়ামী লীগ প্রার্থী সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু আর বিএনপির প্রার্থী কাওসার জামান বাবলা প্রচারণা চালান নগরীর মীরগঞ্জ এলাকায়।
অন্যদিকে এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল আসিফ শাহরিয়ার নগরীতে শেষ মুহূর্তের ভোট প্রার্থনা করেছেন। বসে ছিলেন না কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারাও শেষ প্রচারণায় নিজেদেরকে জনগণের মাঝে উপস্থাপন করেছেন একজন যোগ্য প্রার্থী হিসেবে।
এদিকে সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসীদের খুঁজছে পুলিশ। ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারেন, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করছে প্রশাসন। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে বহিরাগতদের নগরী ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসনের।
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক জানান, সিটির ভোটার নয় এমন বহিরাগতদের সিটির বাইরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। হোটেল-মোটেলে যাতে কোনো বহিরাগত রাতযাপন করতে না পারেন সে জন্য চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভোটের আগে-পরে এমনকি ভোটের দিন যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে সে জন্য তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও অবৈধ অস্ত্রধারীদের খুঁজছে পুলিশ। সুষ্ঠু ভোটগ্রহণে নগরীকে চারটি ভাগে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। এরই মধ্যে নম্বরবিহীন দুইশ মোটরসাইকেল আটক করা হয়েছে।
ভোটগ্রহণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘আমরা চাই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। এজন্য নেওয়া হয়েছে বৃহৎ পরিকল্পনা।’ তিনি ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।’
কমিশন সূত্র জানিয়েছে, সিটির ভোটগ্রহণ হবে ৩৩টি ওয়ার্ডে ১৯৩টি কেন্দ্রে। তিন লাখ ৯৩ হাজার ৯৯৪ জন ভোটার ভোট প্রদানের প্রস্তুতি নিয়েছেন। এর মধ্যে নারী এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৩৮ জন। পুরুষ এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৫৬ জন।
সূত্র জানিয়েছে, এর মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ১০৮টি কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। এ ছাড়া আরো ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ছয়টি স্ট্রাইকিং ফোর্স কাজ করবে। বিজিবি থাকবে ২১ প্লাটুন। কমিশন জানিয়েছে, ১৯৩টি কেন্দ্রে কক্ষ থাকবে ১১২২টি, ১৯৩ জন প্রিসাইডিং অফিসার ও ১১২২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার কাজ করবেন। পোলিং থাকবেন দুই হাজার ২৪৪ জন।
কমিশন জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১০ জন করে পুলিশ ও ১৪ জন আনসার সদস্য থাকবেন। আর সাধারণ কেন্দ্রে আটজন পুলিশ ও ১৪ জন আনসার সদস্য থাকবেন। র‌্যাবের টিম থাকবে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে।