আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদদের সম্মাননা ও পান্ডুলিপির মোড়ক উন্মোচন ॥ আসামের মানুষের সাথে সিলেটের মানুষের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন অত্যন্ত সুদৃঢ়

52

নর্থ ইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আতফুল হাই শিবলী বলেছেন, সিলেটের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি, সামাজিকতাসহ সকল ক্ষেত্রে আসাম অঞ্চলের মানুষের সাথে অভূতপূর্ব সাদৃশ্য বিদ্যমান। দুটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এমন সাদৃশ্য আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। এমনকি করিমগঞ্জ, আসাম, শিলচর কিংবা শিলং-এর মানুষের সিলেট অঞ্চলের প্রতি আন্তরিকতা অসম্প্রদায়িকতার ভীতকে আরো মজবুত করে। সাহিত্য-সংস্কৃতির মেলবন্ধনের এমন আবেগ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। আমাদের এই আবেগকে দৃঢ় করে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরো সমৃদ্ধ করতে হবে।
পান্ডুলিপি প্রকাশন ও কাকন ফকির ফাউন্ডেশন, সিলেট-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ভারতের আসাম বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বরেণ্য শিক্ষাবিদদের সম্মাননা প্রদান এবং সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘পান্ডুলিপি’-এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পান্ডুলিপি প্রকাশন, সিলেট-এর চেয়ারম্যান লেখক-সংগঠক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সলের সভাপতিত্বে গত (২৩ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বাদ সন্ধ্যায় দরগাহ গেইটস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ সভাপতি গল্পকার সেলিম আউয়ালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের আসাম বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. বিশ^তোষ চৌধুরী, প্রফেসর ড. বেলা দাশ, ড. দেবার্শিস ভট্টাচার্য, ড. প্রিয়কান্ত নাথ, ড. বরুণজ্যোতি চৌধুরী, ড. রামী চক্রবর্তী, ড. রমাকান্ত দাশ, নিলামবাজার কলেজ, করিমগঞ্জ-এর বাংলা বিভাগের প্রফেসর ড. সর্বজিৎ দাশ এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন এমসি কলেজ, সিলেট-এর উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান উদ্ভিদবিজ্ঞানী প্রফেসর মোহাম্মদ আজিজুর রহমান লস্কর, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ-গবেষক প্রফেসর নন্দলাল শর্মা, শিক্ষাবিদ লে. কর্ণেল (অব.) সৈয়দ আলী আহমদ, কবি লাভলী চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন লেখক ডা. এম এ জলিল চৌধুরী, কলামিস্ট ইনাম চৌধুরী, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি মুহিত চৌধুরী, আল ইসলাহ-এর সম্পাদক কবি আবদুল মুকিত অপি এডভোকেট, দৈনিক শুভ প্রতিদিনের সাহিত্য সম্পাদক কবি খালেদ-উদ-দীন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মীম হোসাইন এবং কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ফরহাদ হোসেন। অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত অতিথিদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট এবং উপহার তুলে দেওয়া হয়। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘পান্ডুলিপি’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন অনুষ্ঠানে আগত অতিথিবৃন্দ। অনুষ্ঠানে সিলেটের কবি, সাংবাদিক এবং সাহিত্যিকগণ অংশগ্রহণ করেন।
সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্যে ভারতের আসাম বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. বিশ^তোষ চৌধুরী বলেন, সিলেট এবং আসামের মানুষের সবকিছুতে এমন সাদৃশ্যকে মজবুত করে মনুষ্যতে¦র প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে কাজ করতে হবে। একবিংশ শতাব্দীতে নতুন প্রদীপ জ¦ালাতে সকল সম্প্রদায়িকতাকে দূরে বাঙ্গালী হিসেবে পরিচয় দিতে হবে। আজকে এখানে এসে যে সম্মানের অধিকারী হলাম, তা আমাকে আবেগাপ্লুত করেছে। দুটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এমন আবেগ সেতুবন্ধনকে আরো সমৃদ্ধ করবে বলে আমার বিশ^াস।
প্রফেসর ড. বেলা দাস বলেন, আমাদের মধ্যে আঞ্চলিক বিভাজন হলেও মনন এবং চিন্তা-চেতনার দিক দিয়ে বিভাজন হয় নি। দুটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে বিদ্যমান সাদৃশ্য মানবিকতার চেতনায় উজ্জ্বীবিত করে। সিলেটের মানুষের এমন আন্তরিকতায় সত্যিই মুগ্ধ যা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না। সাংস্কৃতিক এবং সাহিত্যের ধারায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে ধারণ করে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে লেখক-সংগঠক বায়েজীদ মাহমুদ ফয়সল বলেন, আমাদের আত্মার আত্মীয় বরেণ্যজনদের সম্মাননা দিতে পেরে নিজেরা গর্ববোধ করছি। কোনো শক্তিই আমাদের মধ্যে বিদ্যমান ভালোবাসাকে আলাদা করতে পারবে না। মানুষ এবং মানবতার কল্যাণে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক চেতনায় বলিয়ান হয়ে উঠবে বলে আমার বিশ^াস। বিজ্ঞপ্তি