ছাতকে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলার ঘটনা ॥ ৯ মাসে আসামী গ্রেফতার নেই, দু’শিশু পিত্রালয়ে জিম্মি

25

ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
সুনামগঞ্জ আদালতে যৌতুক লোভি স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা দায়ের। মামলা দায়েরের ৯ মাসেও আসামি গ্রেফতার নেই। জোরপূর্বক তুলে নিয়ে পিত্রালয়ে আটকেরাখা দু’শিশুকেও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। এসব ঘটনায় মামলার বাদিনীসহ তার পরিবারের লোকজন হতাশায় রয়েছেন।
জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার ছৈলা-আফজলাবাদ ইউনিয়নের তেঘরি-নোয়াগাঁও গ্রামের আরজ আলীর কন্যা খালেদা আক্তারকে ২০১০ সালে এক লক্ষ টাকা দেনমোহরে মুসলিম শরিয়ায় বিয়ে দেয়া হয় ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার ছাতারটিয়া গ্রামের আবদুর রহিমের পুত্র চান মিয়ার সাথে। চান মিয়া বর্তমানে নরসিংদি জেলার মধাবদী উপজেলার ছিতলাবাড়ি মোড় চকবাড়ি এলাকার পারুলের বোন আমেনার বাসায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করে আসছে। আখিঁ বেগম (৬) ও মোস্তাকিন আহমদ (১৫মাস) বয়সের দু’সন্তান তাদের রয়েছে। দ্বিতীয় সন্তান জন্ম নেয়ার পর থেকে যৌতুক লোভি স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। ব্যবসার জন্য ৫০ হাজার টাকা যৌতুক হিসেবে দাবি করে। এতে অপারগতা প্রকাশ করলে দু’সন্তানের জননী খালেদাকে নির্যাতন করে সন্তানসহ তাকে পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দেয়। দাবিকৃত টাকা দেয়া না হলে যৌতুকসহ অন্য মেয়েকে বিয়ে করারও হুমকি দেয় প্রাষন্ড স্বামী। এ ঘটনার কিছুদিন পর দাবিকৃত টাকা না পেয়ে শশুর বাড়িতে এসে স্ত্রীকে নির্যাতন করে জোরপূর্বক নিয়ে যায় দু’শিশুকে। এঘটনায় নির্যাতিত স্ত্রী খালেদা বেগম বাদি হয়ে যৌতুক লোভি স্বামীর বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ আমলগ্রহণকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সিআর মামলা নং-৪৫/১৭ দায়ের করেন।
এদিকে দাবীকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে জোরপূর্বক শিশু-সন্তানদের তুলে নিয়ে পিত্রালয়ে জিম্মি অবস্থায় রেখেছে বলেও জানা গেছে। সন্তানদের উদ্ধার করে আইনগত অভিভাবক হিসেবে মায়ের জিম্মায় ফিরে দিতে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, ছাতক-সুনামগঞ্জে অপর বিবিধ মামলা (নং-১৫/২০১৭ইং) দায়ের করেন দু’সন্তানের জননী খালেদা।
এ ব্যাপারে মামলার বাদীনী খালেদা আক্তার বলেন, যৌতুক লোভি, মাদকসেবি স্বামী চান মিয়ার শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন সইতে না পেরে তিনি ন্যায় বিচারের আশায় আদালতের আশ্রয় নিয়েছেন। আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলেও রহস্য জনক কারণে সেখানের থানা-পুলিশ আসামিকে গ্রেফতার করছে না। আটকে রাখা দু’শিশুকে উদ্ধারও করছে না। মেয়ে আঁখি মোবাইল ফোনে মায়ের কাছে কষ্টের বর্ণনার কথা বলে হাউমাউ করে কেদে বলে তাদেরকে উদ্ধার করে বন্দি থেকে বাঁচাতে। একথা গুলো বলতে-বণতে দুসন্তানের জননী খালেদার দু’চোখে অশ্র“ গড়ায়। তিনি আরো বলেন, আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।