সুনামগঞ্জে দুই আইনজীবী সহ চার জন জেল হাজতে, ছবি তুলতে গেলে সাংবাদিক লাঞ্ছিত

59

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
জালিয়াতির মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হিসাব শাখা থেকে জমি অগ্রক্রয় মামলার ছয় বিচারপ্রার্থীর জমা ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৫৭৫ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আটক দুই আইনজীবীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। সুনামগঞ্জ জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালতের নায়েব নাজির শিফাত শাহরিয়ার সোমবার বিকাল ৩টায় সুনামগঞ্জ সদর থানায় চারজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
রবিবার বিকাল ৪টায় আদালতে বিচারপ্রার্থীর জামি অগ্রক্রয় মামলার জমা টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সুনামগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী ও যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট মাজহারুল ইসলাম, এডভোকেট রেজাউল করিম এবং আদালতের হিসাবরক্ষক ঘেনু চন্দ্র রায়কে আদালত এলাকা থেকে আটক করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত মামলার অপর আসামি সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়ারা জজ আদালতের অবরসপ্রাপ্ত কর্মচারি আব্দুস সোবহানকে পুলিশ গতরাতে ফেনী থেকে আটক করে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসে।
সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে আদালত এলাকায় দুই আইনজীবীর সহযোগীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন সাংবাদিক শহীদনূর আহমদ ও জাহাঙ্গীর আলম। তারা আসামিদের জেলহাজতে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ধারণ করতে গেলে কয়েকজন জুনিয়র আইনজীবী তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং ক্যামেরা কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারা। এদিকে, আদালতে অভিনব জালিয়াতির এই ঘটনাটি প্রকাশের পর সেটি ধামাচাপা দিতে উঠে পড়ে লাগে একটি মহল। সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় এই মহল জড়িত থাকতে পারে বলে মনে করছেন সাংবাদিকরা।
জালিয়াতির মাধ্যমে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি অবগত হবার পর সুনামগঞ্জ সদর আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন টাকা উত্তোলনকারী দুই আইনজীবীও হিসাবরক্ষক ঘেনু চন্দ্র রায়কে ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য বুধবার আদেশ দেন। তাদের কাছ থেকে সন্তোষজনক জবাব না পাওয়ায় রেববার জেলা জজের নির্দেশে রবিবার ৩ জনকে আটক করে পুলিশ।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ শায়েখ আহমদ জানান, আদালতের হিসাব শাখার কর্মচারীদের সহযোগিতায় বিচারপ্রার্থীর জমি অগ্রক্রয় মামলার জমা অর্থ আত্মসাতের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হোক, যাতে আদালত ও আইনজীবীদের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার জায়গাটা সুরক্ষিত থাকে।