মুখ ও মুখোশ

43

আহমেদ কিবরিয়া

বলাকা শ্রেণীর তীক্ষè দৃষ্টি পড়ে দেহটির ‘পর
একে একে কাক, চিল, শকুন এসে জড়ো হয়
হিংস্র থেকে হিংস্রতর হয়ে ছোটাছুটি করে ওরা,
যেন নিমিষেই নিশ্চিহ্ন করবে দেহটি।

নিস্তেজ দেহটি,
আরও কিছুক্ষণ পড়ে রয়।

মুহূর্তেই নির্জন এলাকা কলরবে একাকার
চিল, শকুন, শেয়ালের হাক,
মেঘের গগন বিদারী গর্জন,
তিমির কুন্তল ভেদিয়া বিজলি চমকায়
যেন নিমিষেই জলধরে অশ্র“ ঝরিবে।

নিস্তেজ দেহটি,
আরও কিছুক্ষণ পড়ে রয়।

হঠাৎ নয়ন লেচিয়া তাকায় ত্রাসে,
ত্বরিত লাফিয়া দাঁড়ায় ঘাসে
চিল, শকুন, শেয়াল সরিয়া যায়
জলধির অশ্র“ধারা ঝরিতে থাকে
নিমিষেই আধার ভেদিয়া ওঠে দিবাকর।

নিস্তেজ দেহটি,
আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়।

দিবাকর আসিয়া সাহস, অনুপ্রেরণা যোগায়
বেরিয়ে পড়ে নির্ভীক নৃপতি অজ্ঞাত মুখোশে
গগন বিদারী হুঙ্কারে প্রকম্পিত করে ধরণী,
দুশমন দুর্গ কম্পিত হয় ত্রাসে
যেন নিমিষেই নিশ্চিহ্ন হবে দুর্গটি।

নিস্তেজ দেহটি,
এবার একা নয়।

এক, দুই, তিন…. শত সহস্র সহযোদ্ধা পাশে
ধীরে কৌশলে এগিয়ে চলে সামনে,
একে একে অবরুদ্ধ করে দুর্গটি।

অবাক ধরণী তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে,
নিমিষেই নিশ্চিহ্ন করে খুন, গুম, অন্যায় ও দুর্নীতি ঘেরা
দুর্গটি।

বলাকা শ্রেণীর তীক্ষè দৃষ্টি পড়ে দেহটির ‘পর
জলধির অশ্র“ধারা বন্ধ হয়ে আসে
দিবাকর অস্তমিত, তিমির কুন্তলায় ঢেকে যায় ধরা,
নিস্তেজ দেহটি লুটিয়ে পড়ে মাটিতে,
ধীরে ধীরে নিশ্চিহ্ন হয় দেহটি,
আতরের ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে বাতাসে
স্বাধীন ভূখন্ডে শুরু হয় মহোৎসব।।