হাকালুকি হাওরে রেকর্ড পরিমাণ মাছ উৎপাদনের সম্ভাবনা

41

কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকিতে বন্যার পানি কমছে দ্রুত বেগে। পানি কমার সাথে সাথে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর মাছ। এই মাছ অকাল বন্যার নলমঘত পুষিয়ে জেলেদের মুখে এনে দিয়েছে তৃপ্তির হাসি।
জানা যায়, হাকালুকি হাওরে এবার অকাল বন্যায় শতভাগ বোরো ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফসলের ক্ষতির পাশাপাশি মরেছে মাছ। শুধু হাকালুকি হাওরে ২৫ মেট্রিক টন মাছ মারা যায়। চৈত্র মাসের ১৫ তারিখ থেকে আশি^ন মাস পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ মাসের দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় এবং বিপুল পরিমান মাছের পোনা অবমুক্তসহ প্রশাসন মৎস্য আইন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে থাকায় এবার মাছের উৎপাদন বিগত ৭ বছরের রেকর্ড অতিক্রম করার আশা করছে উপজেলা মৎস্য বিভাগ।
স্থানীয় জেলে ছিদরত আলী, হোসেন আহমদ, জাকির মিয়া, সেলিম মিয়া, জলিল মিয়া প্রমুখ জেলেদের ভাষায় ‘আল্লাহ এবার মাছ নিয়েছেন মুঠো ভরে, আর দিয়েছেন দুই নহাত ভরে’। কৃষকরাও ধান হারিয়ে যতটা হতাশা হয়েছিলেন তারাও একন অনেকটাই স্বস্তিতে আছেন।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য অফিসার মোঃ সুলতান মাহমুদ জানান, দেশীয় প্রজাতির মাছের এলবাম তৈরির লক্ষ্যে ছবি তোলার সুবাদে হাকালুকি হাওর সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা, মাছ বাজার ও জলমহাল পরিদর্শন এবং মৎস্যজীবী, জেলে, মাছ ব্যবসায়ী ও অভিজ্ঞজনদের সাথে আলোচনার প্রেক্ষিতে ধারনা করা হচ্ছে এ বছর মাছের উৎপাদন ১৫-২০% বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও জানান, মাছ মারা যাওয়ার পরও এবার বেশি মাছ পাওয়ার কারণ দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় মাছ ফিডিং, ব্রিডিং ও নার্সিং এর উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে এবং বড় হওয়ার জন্য বেশি সময় পেয়েছে। সরকারিভাবে অতিরিক্ত পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া বিল নার্সারি স্থাপন, অভয়াশ্রম স্থাপন এবং সর্বোপরি মৎস্য আইন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থান নেয়ার ফলে মাছের উৎপাদন বেড়েছে।
উল্লেখ্য, গত তিন মাসে শুধু কুলাউড়া উপজেলাতেই ১৯টি মোবাইল কোর্ট ও ৩১ টি অভিযান পরিচালিত হয়েছে।