সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ ॥ রাতারগুল জলাবন ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে একটি প্রভাবশালী মহল

40

স্টাফ রিপোর্টার :
রাতারগুল জলাবনকে প্রভাবশালী মহলের হাত থেকে রক্ষায় এগিয়ে আসা নিরীহ গ্রামবাসীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি অপপ্রচার চালিয়ে তাদেরকে সমাজে হেয় করার চেষ্টা করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেছেন রাতারগুল গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মো. গিয়াস উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, সিলেটের সুন্দরবন নামে খ্যাত রাতারগুল জলাবন দেশের একমাত্র মিঠা পানির বনাঞ্চল। প্রতিদিন হাজার হাজার প্রকৃতি প্রেমীর আগমন ঘটে রাতারগুলে। এটি রাতারগুল গ্রামকেও আলোকিত করেছে। কিন্তু রাতারগুল নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন সিলেট বন বিভাগের সারি রেঞ্জের কর্মকর্তা সাদ উদ্দিন আহমদ। তিনি স্থানীয় কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহলের সহযোগিতায় রাতারগুলকে ধ্বংসের পাঁয়তারা করছেন। পাশাপাশি হিংসা পরায়ন হয়ে এলাকার নিরীহ লোকদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। তার নিজস্ব লোকদের দিয়ে রাতারগুল সহব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির দু’জন সদস্যের সঙ্গে অর্থের বিনিময়ে রাতারগুল জলাবনের খাল মুখে জাল বসিয়ে মাছ ধরার অনুমতি দেন। চুক্তির ২০ হাজার টাকা ইতিমধ্যে তিনি গ্রহণ করেছেন। এখানে জাল বসানোর ফলে রাতারগুলের সৌন্দর্য্য নষ্ট হবে এবং পর্যটকরা বিমুখ হয়ে যাবেন এ আশঙ্কায় গ্রামবাসী এর প্রতিবাদ করেন। বনের পরিবেশ ধ্বংস করে অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ ধরার প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সাদ উদ্দিন। গ্রামবাসীর প্রতিবাদের মুখে ৩/৪ দিন পর জাল সরিয়ে নেন তার লোকজন। যে কারণে সাদ উদ্দিন গ্রামের নিরীহ হারিছ মিয়া, জমির উদ্দিন, আমির উদ্দিনসহ অজ্ঞাতনামা ১০ জনের বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাতারগুলে অভিযানের নামে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করছেন। গ্রামের মৃত হাজির আলীর পুত্র সোনা মিয়াকে গত ১৪ অক্টোবর নৌকা ঘাটে ডেকে নেন। খেয়াঘাটে নেয়ার পর তিনি সোনা মিয়ার বিরুদ্ধে মাছ ধরার অভিযোগ রয়েছে বলে জানান। কিন্তু ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফতেহপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী ও সাবেক চেয়ারম্যান মাস্টার ইসমাইল আলীসহ উপস্থিত লোকজন সোনা মিয়ার বিরুদ্ধে মাছ ধরার অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান। পাশাপাশি এসিল্যান্ডও চেয়ারম্যান দ্বয়ের বক্তব্যের সাথে একমত পোষণ করে বলেন, সোনা মিয়াকে ঘুমন্ত অবস্থায় ডেকে আনা হয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মাছ ধরা কিংবা পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে কোনো মামলা নেই। যে কারণে এসিল্যান্ড সোনা মিয়া কিংবা এলাকার কাউকেই মাছ ধরার অভিযোগে আটক করেননি। তার দ্বারা প্রভাবিত হয়ে স্থানীয় একটি সংবাদপত্রে অভিযানের সময় মাছ ধরার অভিযোগে গ্রামের ৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে একটি সংবাদ প্রকাশ করা হয়। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। রেঞ্জ অফিসার সাদ উদ্দিন গ্রামবাসীকে আরো মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন গ্রামবাসী। সংবাদ সম্মেলনে রাতারগুল গ্রামের নিরীহ লোকদের উপর দায়েরকৃত মামলা সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়ে সাদ উদ্দিন আহমদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং রাতারগুলকে রক্ষায় এগিয়ে আসার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন আব্দুল হাসিম, আমির আলী, সোনা মিয়া, আকবর, রইছ উদ্দিন, মনু মিয়া, মো. হারিছ মিয়া প্রমুখ।