মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তারা ॥ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে চা শ্রমিক সন্তানদের জন্য পৃথক ৫ শতাংশ কোটার দাবী

67

চা শ্রমিক সন্তানদের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক ৫ শতাংশ কোটা দাবিতে গতকাল সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে TTTTমানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদ ।
এর আগে সোমবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র-যুব কল্যাণ পরিষদ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সিলেট বিভাগে ১৫৮টি চা বাগান রয়েছে। এসব চা বাগানের নিরীহ শ্রমিক জনগোষ্ঠী সেই ব্রিটিশ শাসনামল থেকে শোষিত হয়ে আসছে। বাগান কর্তৃপক্ষ মুনাফা অর্জন করলেও শ্রমিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান সরকার মধ্যম আয়ের দেশ ঘোষণা করলেও চা বাগানের শ্রমিকরা বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠী হিসেবেই আছে। চা বাগানের শ্রমিকরা ৮৫ টাকা মজুরি ভিত্তিতে কাজ করে, যা দুই কেজি চাল কেনারও মূল্য নয়, মৌলিক চাহিদা পূরণতো স্বপ্ন। এই আয়ের বিপরীতে চলে ৪/৫ জন চা শ্রমিকের সংসার।
এ অবস্থায় একজন শ্রমিকের সন্তান কি করে উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন দেখতে পারে? প্রশ্ন রেখে স্মারকলিপিতে বলা হয়, সরকার হয়তো নিজ স্বার্থে তাদের ভোটাধিকার দিয়েছে, কিন্তু অধিকার দেয়নি। অন্যের জমিতে বসবাসকারী পরাধীন জাতি চা শ্রমিকরা সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে নিজ সন্তানদের ভর্তির স্বপ্ন দেখা অবাস্তব।
এছাড়া চা বাগানের মালিক সমিতি কখনোই চায় না শ্রমিক সন্তানেরা ন্যূনতম শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। বর্তমানে সভ্য সমাজের ছোঁয়ায় চা শ্রমিকদের সন্তানেরা শিক্ষাক্ষেত্রে কিঞ্চিৎমাত্র এগিয়ে আসছে। বাকিরা সুশিক্ষার অভাবে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ছে। অথচ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিভিন্ন ধরণের কোটা থাকলেও চা শ্রমিকদের সন্তানরা ভর্তির স্বপ্ন দেখতে পারছে না। ফলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের পথ মসৃণ করতে, স্বপ্ন বাস্তবায়নে শাবিপ্রবিসহ সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৃথক কোটা পদ্ধতি চালুর দাবি জানাচ্ছি।
এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব কল্যাণ পরিষদ এর সহ-সভাপতি আতাউর রহমান শামীম। মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি বরুন সিং ছত্রী।
সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি দিলিপ রঞ্জন কুর্মী’র সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সুজিত বাড়াইক এর সঞ্চালনায় সংহতি প্রকাশ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কীম, গণসাহিত্য কেন্দ্র সিলেট এর সমন্বয়ক আহমেদ সোহেল, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম এর কার্যকরী সদস্য নারায়ণ কুর্মী, স্বপ্নকুড়ি সমাজ  কল্যাণ সংস্থা এর নির্বাহী পরিচালক বিজয় রুদ্রপাল, দলদলি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি মিঠন দাশ, বিশ্ববিদ্যালয় চা-ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি প্রদীপ দাশ, সিলেট চা জনগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব কল্যাণ পরিষদ এর নারী ও শিশু সম্পাদিকা ঊষা রানী দাশ, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ এর প্রচার সম্পাদক থেকে দেবাশীষ যাদব প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনের পক্ষ থেকে উপাস্থিত ছিলেন রাজ কানু, দিলিপ পাশী, রাজকুমার দেশোয়ারা সাগর কুমার চাষা, রাজন রায়, মনোরঞ্জন দাশ, অপুদাশ, হামিদ হোসেন, কিশোর সিং ঘাটোয়ার, মিটন চন্দ, বিক্রম রায়, নিপেন রায়, মনিশংকর দাশ, তাপস নায়েক, রঙ্গিলা মুন্ডা, রাজেন গঞ্জু, রঞ্জন নায়েক, লিটন লোহার, সুজন লোহার প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি