লাগাম টেনেছে চালের খুচরা বাজারে

55

কাজিরবাজার ডেস্ক :
85522_b1লাগাম টেনেছে চালের খুচরা বাজারে। দাম কিছুটা কমে এখন স্থির বাজার। তবে দাম যে পরিমাণ বেড়েছিল এই কদিনে সে পরিমাণ কমেনি। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, বাড়তি দামে পাইকারি বাজার থেকে চাল কেনায় এখনো বেশি দামেই বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া পাইকারি বাজারে ব্যবসায়ীরা যে চাল মজুত করেছিলেন তা এখনও বেশি দামে বিক্রি করছেন। গতকাল কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে বাজারে মোটা চালের দাম যে পরিমাণ কমেছে সেই তুলনায় সরু চালের দাম কমেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরু চালের মজুত কম থাকায় দাম কমেছে কম। গত এক সপ্তাহে মোটা চাল কেজিতে দুই থেকে তিন টাকা কমেছে। তবে অন্যান্য চালেও কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা কমেছে। রাজধানীর শান্তিনগর ও কারওয়ান বাজারের চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা মোটা চাল মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ২১০০ টাকা থেকে ২৩০০  টাকায়। এখন বাজার দুটিতে কেজিপ্রতি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪ থেকে ৪৬ টাকায়। শান্তিনগরের জাহাঙ্গীর আলম রাইচ এজেন্সির স্বত্বাধিকারী বলেন, কয়েকদিন ধরে মোটা চালের দাম কমেছে। তবে এখন বাজার স্থির। একজন ব্যবসায়ী জানান, ভারত থেকে মোটা চাল বা স্বর্ণা চালের আমদানি ভালোই হচ্ছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৫০ কেজির ভালোমানের মিনিকেট চাল বস্তাপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৩১০০ টাকা থেকে ৩২০০ টাকা। নাজিরশাইল ৩৫০০ টাকা থেকে ৩৬০০ টাকা। বি আর আটাশ ২৭০০ থেকে ২৯০০ টাকায়। পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ টাকায়। গত তিনদিনে এসব চালের বস্তায় গড়ে ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। মানভেদে মিনিকেট চাল ৩ টাকা কমে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬২ টাকা থেকে ৬৪ টাকায়। এছাড়া আটাশ ও পাইজাম কেজিপ্রতি ৪ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫৬ ও ৪৬ টাকা। তবে কোনো কোনো খুচরা দোকানদার মিনিকেট চাল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকায়ও বিক্রি করছেন বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। চাল ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৫৮ টাকার কথা শুনে কিনতে এসে দেখি ৬৩ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দামেই তো কিনতে হচ্ছে। চালের দাম কমালো কোথায়? সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী গতকাল মোট চাল (স্বর্ণা/ চায়না ইরি) কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। উন্নতমানের নাজির ও মিনিকেট ৬৫ থেকে ৬৭ টাকা। সাধারণ মানের নাজির ও মিনিকেট ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। পাইজাম ও লতা উন্নতমানের ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। সাধারণ মানের ৫৪ থেকে ৫৬ টাকা। এদিকে স্বর্ণা ও চায়না ইরি মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৭ থেকে ৫০ টাকায়। সংস্থাটির তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চাল ও সরু মিনিকেট চালসহ সব ধরনের চালের দাম কেজি প্রতি কমেছে ২ টাকা। খুচরা চালের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৩-৬৭ টাকা, নাজিরশাইল ৬৫-৭০, আটাশ ৫৩-৫৮ এবং ইন্ডিয়ান পারি ৪৭ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে শ্যামলী সমবায় মার্কেটে, প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৬৪ থেকে ৬৮ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭২, আটাশ ৫৭ থেকে ৫৯ এবং ইন্ডিয়ান পারি বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫১ টাকা পর্যন্ত। এক ব্যবসায়ী জানান, মো. হারুন শেখ বলেন, পাইকারি দোকানগুলো দাম কমাচ্ছে না। তারা হাজার হাজার বস্তা চাল স্টকে রেখে দিয়েছে। এখানে ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে মনিটরিং করানো উচিত। প্রতি বস্তা চালে তারা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা লাভ পেয়েও বিক্রি করছে না। ক্রেতাদের সঙ্গে আমাদের দর কষাকষি করতে হয়। এ কারণে অনেক ক্রেতা বিরক্ত হয়ে চাল না কিনে চলে যান। নাসিমা নামের এক ক্রেতা বলেন, ১০ কেজি চাল কিনতে এসেছিলাম। যে টাকা এনেছি তাতে আট কেজি চাল পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের নিম্নআয়ের মানুষের ভোগান্তি সব চেয়ে বেশি। আবার ওএমএসে যে চাল বিক্রি হয় তা আতপ চাল। কি করবো বাধ্য হয়ে এখন কম খেয়ে থাকতে হচ্ছে।