কিশোর অপরাধ প্রতিকারে ইসলাম

245

॥ মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান ॥

(পূর্ব প্রকাশের পর)
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে রেডিও, টেলিভিশন, ইন্টারনেট, পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন মোবাইল, ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ, ইউটিউবের ন্যায় গণমাধ্যমগুলো শিশু-কিশোরদের দারুণভাবে প্রভাবিত করে। তাই উক্ত গণমাধ্যমগুলো ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিভাবকরা যথেষ্ট সচেতন না হলে কোমলমতি শিশু-কিশোররা অপরাধে লিপ্ত হতে পারে। বিশেষ করে কুরুচিপূর্ণ যৌন আবেগে ভরপুর ম্যাগাজিন ও পত্রিকা কিশোর-কিশোরীদের মন-মানসিকতার উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। যৌন রসে সিক্ত সিনেমা, বিজ্ঞাপন চিত্র, ফ্যাশন শো-এর নামে টেলিভিশনে প্রদর্শিত যৌন আবেদনময়ী অনুষ্ঠানমালা আবেগপ্রবণ কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রবল উত্তেজনা ও মানসিক চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে বিপথগামী করে তোলে। এছাড়া টেলিভিশনে প্রদর্শিত দুঃসাহসিক অভিযাত্রার সিরিয়াল, ভায়োলেন্স এবং অপরাধের নানা কলা-কৌশল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কিশোর-কিশোরীরা অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।
মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তিও অনেক ক্ষেত্রে কিশোর অপরাধের উৎপত্তি ঘটায়। মাদকদ্রব্য ক্রয়ের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে অনেক কিশোর-কিশোরীরা বিভিন্ন গুরুতর অপরাধে লিপ্ত হতে পারে। এছাড়াও মাদকদ্রব্য পাচার ও বিপণনের কাজে কিশোর-কিশোরীরা জড়িত থাকার কারণে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলার চরম অবনতি ঘটতে পারে এবং দেখা দিতে পারে নানা ধরনের অপরাধ। এজন্যই মাদকদ্রব্যকে বলা হয়েছে, সকল প্রকার খারাপ কাজের সূতিকাগার।। কেননা মাদকাসক্ত ব্যক্তি আত্মনিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং তার মানসিক ও শারীরিক বিপর্যয় ঘটে। ফলে সে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, নারী-শিশু নির্যাতন, সহিংসতা, চাঁদাবাজি, আত্মহত্যা, পকেটমারা ইত্যাদি বড় বড় সামাজিক  অপরাধে জড়িয়ে  পড়ে। সর্বোপরি মাদকাসক্তি মানষকে আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে বিমুখ করে রাখে এবং পারস্পরিক শত্র“তা সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দেয়। এ ব্যাপারে মহান আল্লাহ বলেন, “শয়তান চায় মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে শত্র“তা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে, আল্লাহর স্মরণ ও সালাত থেকে বিরত রাখতে। তবে কি তোমরা নিবৃত্ত হবে না?
মদপানের ভয়াবহতা ও অনিষ্টতার বর্ণনা দিতে গিয়ে ‘উছমান রা. বলেন, ‘পূর্ববর্তীকালে একজন ভালো লোক সর্বদা ইবাদত বন্দেগীতে লিপ্ত থাকত। একজন মহিলা হিংসার বশবর্তী হয়ে তার ক্ষতি করার ইচ্ছা করলো। তখন সে তার দাসী পাঠিয়ে লোকটিকে ডেকে আনল। লোকটি মহিলার ঘরে প্রবেশ করলে সে দরজা বন্ধ করে দিল। একজন সুন্দরী মহিলা, একটি সুদর্শন বালক ও এক পেয়ালা মদ দেখিয়ে মহিলাটি বললো, আমি প্রস্তাব করব, তার কোন একটি গ্রহণ না করলে তোমার মুক্তি নেই। হয় এই সুন্দরী মহিলার সাথে ব্যভিচার করতে হবে, নয়তো এ সুদর্শন বালককে হত্যা করতে হবে, আর না হয় মদ পান করতে হবে। লোকটি ভেবে দেখল, তিনটি অপরাধের মধ্যে মদ পান অপেক্ষাকৃত লঘু অপরাধ। অতএব, লোকটি মদ পান করার সিদ্ধান্ত নিলো। অতঃপর সে বললো, আমাকে মদ দাও। তখন তাকে মদ পান করতে দেযা হলো। সে অধিক মদ পান করে সম্পূর্ণভাবে মাতাল হয়ে গেল। এরপর সে ঐ সুন্দরী মহিলার সাথে ব্যভিচার করলো এবং এক পর্যয়ে বালটিকেও হত্যা করলো।’ উপর্যুক্ত ঘটনা থেকে বুঝাযায় যে, মদ পানকারী শুধু নির্দিষ্ট একটি অপরাধের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না; বরং তার দ্বারা অসংখ্য অপরাধ সংঘটিত হতে পারে।
আর্থ-সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রভাবে মানসিক গুণাবলীর সুষ্ঠু বিকাশ ও ব্যক্তিত্ব গঠনের অভাবে শিশু-কিশোররা অপরাধ প্রবণ হয়ে উঠে। এজন্যই প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েড “সিগমুন্ড ফ্রয়েড, ঝরমসঁহফ ঋৎঁফ, ১৮৫৬ সালের ৬ই মে মোরাভিয়ার অন্তর্গত ফ্রাইবার্গ নামক একটি ছোট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম জেকর ফ্রয়েড এবং মাতার নাম এ্যামিলিয়া নাথানস। তিনি ১৮৭৩ সালে ১৭ বছর বয়সে ডাক্তারী পড়তে ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং ১৮৮১ সালে ২৫ বছর বয়সে ডাক্তারী পাশ করে ডক্টর অব মেডিসিন উপাধি লাভ করেন। ১৯৩৯ সালে তিনি মারা যান। অবদমিত কামনাকে অপরাধের কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ ব্যাপারে বার্ট্রান্ড রাসেলের মন্তব্যটিও প্রনিধানযোগ্য। তিনি বলেন, “বেশির ভাগ নিষ্ঠুরতার জন্ম হয় শৈশবকালীন বঞ্চনা এবং নিপীড়নের কারণে। মানুষের স্বাভাবিক বিকাশের পথ রুদ্ধ হলে মনের কোমল অনুভূতিগুলো নষ্ট হয়ে তার বদলে জন্ম নেয় হিংসা, নিষ্ঠুরতা এবং ধ্বংসাত্মক মনোভাব। এছাড়া ব্যক্তিগত আবেগীয় সমস্যাও কিশোর অপরাধের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচিত। এ ধরনের কিশোররা খুব সহজেই অনিয়ন্ত্রিত আবেগে আক্রান্ত হয়ে তাৎক্ষণিক প্রয়োজন ও  চাহিদা পুরণের মাধ্যমে সুখ ও সন্তুষ্টি লাভে সচেষ্ট হয় এবং অপরাধ সংঘটন করে। এজন্যই মার্কিন মনোবিজ্ঞানী হিলে ও ব্র“নার কিশোর অপরাধের জন্য বাধাগ্রস্ত আবেগকে দায়ী করেছেন।
কিশোর অপরাধ সংঘটনে উপর্যুক্ত কারণগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সক্রিয় থাকতে পারে। তবে কিশোর অপরাধের প্রধান ও মূল কারণ হলো মানসিক। কেননা মানুষের প্রতিটি কর্মই মনের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়ে থাকে। আর মানসিক বিকাশ সঠিক ও সুন্দর প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন না হলে শিশু-কিশোরদের আচরণে বিরূপ প্রভাব পড়ে এবং তাকে অপরাধ প্রবণতার দিকে ধাবিত করে। মানব মন মহান আল্লাহর এক বিস্ময়কর সৃষ্টি। এর সুষ্ঠু লালন ও বিকাশ সাধন করলে তা ভাল কাজ সম্পাদন করে। আর লালন পালন ও বিকাশ সাধনে ত্র“টি হলে তা দ্বারা মন্দ কর্ম বা অপরাধ সংঘটিত হয়। মনের এ বিপরীতমুখী দ্বিবিধ আচরণের বাস্তব তত্ত্ব তুলে ধরে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “প্রাণের শপথ, আর শপথ সে সত্তার, যিনি তাকে সুসংহত করেছেন। অতঃপর তাকে দিয়েছেন ভাল-মন্দের অনুভূতি। যে তাকে পরিচ্ছন্ন রেখেছে, সে নিশ্চিত কল্যাণ লাভ করেছে। আর সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তাকে মলিন করেছে।  নু’মান ইবন বাশীর রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন, “সাবধান শুনে রেখো,  দেহ বা শরীরে একটি গোশতের টুকরা আছে, যখন তা সুস্থ ও ভাল থাকে তখন সমস্ত দেহ ও শরীর ভাল থাকে এবং তা যখন নষ্ট ও বিকৃত হয়ে যায় তখন সমস্ত দেহ ও শরীর নষ্ট হয়ে যায়। জেনে রেখো, সেটি হলো ক্বালব বা অন্তর।
কিশোর অপরাধ প্রতিকারে ইসলামের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমন্ডিত। সঠিক পন্থায় শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ না হওয়ার কারণেই মূলত কিশোর অপরাধ সংঘটিত হয়। এ ছাড়াও যে সব কারণে এই ব্যাধির সৃষ্টি হয়, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কিশোর অপরাধ প্রতিকার করা সম্ভব। এক্ষেত্রে ইসলাম সর্বজনস্বীকৃত প্রতিরোধমূলক ও সংশোধনমূলক ব্যবস্থা প্রয়োগের মাধ্যমে তা প্রতিকার করেছে। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থায় ইসলাম বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে। আর সংশোধনমূলক ব্যবস্থায় নিয়েছে বাস্তবসম্মত নানা পদক্ষেপ।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বলতে বুঝায় শিশু-কিশোরদের মধ্যে যাতে প্রথম থেকেই অপরাধ  প্রবণতার সৃষ্টি না হয়, তার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করা। যেসব কারণে শিশু-কিশোরদের মধ্যে অপরাধ প্রবণতা দেখা দেয়, সেগুলোকে আগে থেকে দূর করাই এ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। “সাধন কুমার বিশ্বাস ও সুনীতা বিশ্বাস, শিক্ষা মনোবিজ্ঞান ও নির্দেশনা, মানবজীবন কতগুলো স্তর বা ধাপের সমষ্টি। জীবন পরিক্রমায় এই স্তর বা ধাপ অতিক্রম করে অগ্রসর হতে হয়। শিশু-কিশোরদের জীবন-প্রকৃতি বড়দের থেকে আলাদা। তাদের চাহিদা এবং বিকাশকালীন প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধাও ভিন্নতর বিধায় পরিবেশ পরিস্থিতি শিকার হয়ে তারা যেন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য যেসব কার্যকারণ অপরাধকর্মে লিপ্ত হতে তাদেরকে উৎসাহিত করে অথবা তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় কিংবা তাদেরকে তা করতে বাধ্য করে, সেগুলোকে চিহ্নিত করে অপরাধ সংঘটনের পূর্বেই তা প্রতিরোধের ব্যবস্থা করেছে ইসলাম। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ইসলাম পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর কতিপয় আবশ্যকীয় দায়িত্বারোপ করেছে, যা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
কিশোর অপরাধ প্রতিরোধের উত্তম স্থান হলো পরিবার। জন্মের পর শিশু পারিবারিক পরিবেশে মাতা-পিতার সংস্পর্শে আসে। শিশুর সামাজিক জ ীবনের ভিত্তি পরিবারেই রচিত হয়। তাই তাদের আচার-আচরণ ও ব্যক্তিত্ব গঠনে পরিবার গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। এ জন্যই ইসলাম শৈশবকাল থেকে ঈমানের শিক্ষা, ‘ইবাদতের অনুশীলন, ইসলামের যথার্থ জ্ঞানার্জন ও নৈতিকতা উন্নয়নের দায়িত্ব ন্যস্ত করেছে পরিবারের উপরে। যাতে করে আগামী দিনের ভবিষ্যৎ শিশু-কিশোররা অপরাধমুক্ত থাকতে পারে। আল্লাহ তা’আলা মুমিনদেরকে এবং তাদের পরিজনদের অপরাধমুক্ত জীবনযাপন করার মাধ্যমে জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রাণের নির্দেশ দিয়ে বলেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও।
উক্ত আয়াতের তাৎপর্য বর্ণনা করতে গিয়ে প্রখ্যাত মুফাস্সির ইমাম কুরতুবী রহ. লিখেছেন যে, আমাদের সন্তান-সন্ততি ও পরিবার পরিজনদের ইসলামী জীবন ব্যবস্থা, সমস্ত কল্যাণকর জ্ঞান ও অপরিহার্য শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া আমাদের কর্তব্য। অনুরূপভাবে মহানবীর স. হাদীসেও শিশু-কিশোরদের সুষ্ঠু বিকাশ ও সামাজিকীকরণে পরিবারের দায়িত্বের বিষয়টি নির্দেশিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ স. বলেছেন, “প্রত্যেকেই নিজ পরিবারের লোকদের তত্ত্বাবধায়ক এবং সে নিজের অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। আর স্ত্রী তার স্বামীর সংসার ও তার সন্তানাদির অভিভাবক। তার এ দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে। রাসূলুল্লাহ স. আরো বলেছেন, “পিতা তার নিজের সন্তানকে যা কিছু দান করেন তার মধ্যে সর্বোত্তম হলো ভাল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ। অতএব, বলা  যায় যে, কিশোর-কিশোরীর আচরণ ও ব্যক্তিত্বের  উন্নয়নে পরিবার সর্বাধিক অনুকূল পরিবেশ যোগায়। বিশেষ করে এক্ষেত্রে পিতা-মাতার ভূমিকা অপরিসীম। কেননা তারাই শিশু-কিশোরের সামনে বহির্বিশ্বে বাতায়ন প্রথম  উন্মুক্ত করে দেয় এবং সন্তানের অনুপম চরিত্র গঠনের কার্যকর অবদান রাখতে পারেন।
ঈমান “ঈমান শব্দের অর্থ হলো বিশ্বাস করা। পরিভাষায় রাসূলুল্লাহ স. তাঁর মহান রবের থেকে যা নিয়ে এসেছেন তা মনেপ্রাণে গ্রহণ ও বিশ্বাস করাকে ঈমান বলে। মানব জীবনের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যুগে যুগে নবী-রাসূলগণ মানবজাতিকে ঈমানের দিকে দা’ওয়াত দিয়েছেন। জাগতিক জীবনের প্রকৃত শান্তি, বিশুদ্ধ জীবনযাত্রা, সামগ্রিক কল্যাণ ও পারলৌকিক উক্তি ইত্যাদি সবকিছুর সফলতা প্রকৃত অর্থে ঈমানের বিশুদ্ধতার উপরই নির্ভরশীল। ঈমান হলো সকল প্রকার অপরাধ প্রতিরোধক। অপরাধমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে ঈমানের ভূমিকা অপরিসীম। যার হৃদয় মনে ঈমান সক্রিয় ও জাগরুক থাকে, সে কখনোই কুরআন-সুন্নাহর বিধি-বিধান লংঘন করে অপরাধে লিপ্ত হতে পারে না। তবে ঈমান যেমন মানুষকে আল্লাহ ও রাসূলের অনুগত বানায়, তেমনি কুফর বানায় শয়তানের অনুসারী। যারা নিজেদেরকে শয়তানের অনুসারীতে পরিণত করবে তারাই শয়তানের প্ররোচণায় সকল প্রকারের পাপকর্ম ও অপরাধে লিপ্ত হতে বাধ্য হবে। আল্লাহ ঈমানদারদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলো না। কেননা যে শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণের নীতি গ্রহণ করবে, শয়তান তাকে অশ্লীলতা ও অপরাধমূলক কর্মেরই আদেশ করবে।
কেবলমাত্র ঈমানই পারে মানুষকে খারাপ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে। এ জন্যই শিশু-সন্তান যখন প্রথম কথা বলতে শুরু করে, তখন ঈমানের প্রশিক্ষণ হিসেবে পিতা-মাতার উচিত, সন্তানের মুখ দ্বারা সর্বপ্রথম আল্লাহর নাম উচ্চারণ করানো। এ প্রসঙ্গে হাদীসে বলা হয়েছে, “তোমরা তোমাদের সন্তানদের প্রথম কথা শুরু করবে এই বলে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই।
একদা রাসুলুল্লাহ স. জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কোন কাজটি সবচেয়ে উত্তম? জবাবে তিনি বলেছিলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপন করা। এছাড়াও সন্তানদেরকে আল্লাহর সৃষ্টি জগতের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে যুক্তির মাধ্যমে আল্লাহর অস্তিত্ব ও একত্বের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন তথা ঈমান (অসমাপ্ত)