সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ কানাইঘাটে আপন ভাই কর্তৃক প্রবাসীর সম্পদ আত্মসাৎ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ

62

স্টাফ রিপোর্টার :
কানাইঘাটে আপন ভাই কর্তৃক ক্যান্সার আক্রান্ত এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর সম্পদ আত্মসাৎ এবং ওই প্রবাসীকে হত্যা চেষ্টারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি প্রবাসীর দুই বোন ও ভাগনাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন উপজেলার উমাগড় গ্রামের মৃত ক্বারী আজির উদ্দিনের পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মো. খলিলুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে খলিলুর রহমান বলেন, প্রথমে তিনি সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে এবং পরে লন্ডনের একটি মসজিদে ইমামতির দায়িত্ব পালন করেছেন। স্ত্রী সন্তান না থাকায় দীর্ঘ জীবনের ইমামতি করে প্রবাস থেকে কষ্টার্জিত অর্থ দেশে থাকা তার একমাত্র ছোট ভাই মখলিছুর রহমানের নিকট প্রেরণ করেছেন। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যে থাকাবস্থায় হঠাৎ করে তিনি মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। সেখানে চিকিৎসা করে  কোনো ফল না পেয়ে মে মাসে দেশে চলে আসেন। যুক্তরাজ্যে থেকে প্রেরিত অর্থ ছোট ভাই মখলিছুর রহমান তার নিজ নামীয় একাউন্টে (যার নং ৪৩১০) ইসলামী ব্যাংক কানাইঘাট শাখায় জমা রাখে। বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে প্রেরিত টাকার পরিমাণ ৫০ লাখ। এছাড়া তার পাঠানো আরো ২০ লাখ টাকা মখলিছুর রহমান তার নামে এবং স্ত্রী সন্তানদের নামে কানাইঘাট ইসলামী ব্যাংকে ডিপোজিট করে রাখেন। কানাইঘাটের নিজবাড়িতে দালানকোঠা নির্মাণ এবং সিলেটের টিলাগড় মৌজায় তারা দুই ভাইয়ের নামে সাত শতক ভূমি তার অর্থে ক্রয় করে এবং সেখানে একটি ঘরও নির্মাণ করে দেন। এছাড়াও তার টাকায় ক্রয়কৃত বাড়িতে এক বিঘা জায়গা রয়েছে। মৃত্যুর পূর্বে তাদের পিতা কোনো ভূ-সম্পত্তি রেখে যাননি। দেশে থাকা সকল সম্পত্তি দেখাশুনা করতেন মখলিছুর রহমান।
তিনি বলেন, মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মে মাসে দেশে আসার পর যখনই সম্পদের একটি অংশ মসজিদ মাদরাসা এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দান করার সিদ্ধান্ত নেন, তখনই মখলিছুর রহমানের আচার আচরণে পরিবর্তন চলে আসে। মখলিছ তার সমন্ধি ফার্মাসিস্ট ছালিক আহমদের সহযোগিতায় একটি স্যালাইন এনে তাতে বিষজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে তার শরীরে পুশ করেন। এতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ভাগনে গিয়াস উদ্দিন ও এখলাছ উদ্দিন তাকে সিলেট নগরীর উইমেন্স মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসতে চায়। এতে মখলিছ ও তার স্ত্রী নাসিমা বেগম বাধা দেয় এবং তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও প্রদান করে তারা। অসুস্থতার খবর শোনে বোন জয়বুন নেছা ও খয়রুন নেছা আসলে তাদের সাথেও মখলিছ ও তার স্ত্রী নাসিমা দুর্ব্যবহার করে।
তিনি আরো বলেন, চিকিৎসা ব্যয় মেটানোর জন্য ব্যাংক থেকে টাকা তুলে দেওয়ার জন্য বললে মখলিছ টাকা দিবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। গত ৩ জুলাই কানাইঘাট থেকে সিলেট শহরে আসার পথে মুক্তিরচক এলাকায় মখলিছ তার সহযোগী মুহিবুর রহমান, শামীম আহমদ ও ছালিক আহমদকে সাথে নিয়ে সিএনজি অটোরিক্সা গতিরোধ করে ইসলামী ব্যাংক সিলেট তালতলা শাখার ৩টি ডিপোজিট রশিদসহ তার সাথে থাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র জোরপূর্বক নিয়ে যায়। বোন ও ভাগনারা তার দেখাশোনা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় মখলিছ তাদের উপরও ক্ষেপে আছে। আত্মীয় স্বজন ও স্থানীয় মুরব্বিদের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে কোনো ফল না পাওয়ায় কানাইঘটা থানায় গত ১৮ জুলাই লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এতে আসামি করা হয়েছে মখলিছুর রহমান, তার স্ত্রী নাসিমা বেগম, সমন্ধি নারাইনপুর গ্রামের হাজী আজিজুর রহমানের পুত্র ছালিক আহমদ গংদের। তিনি বলেন, জীবনের অন্তিম লগ্নে এসে কষ্টার্জিত অর্থ থেকে চিকিৎসার খরচ রেখে একটি অংশ স্বজনদের দান করে বাকি অংশটুকু মসজিদ, মাদরাসাসহ দ্বীনি প্রতিষ্ঠানে দান করে যেতে চান। এ ব্যাপারে তিনি সিলেটের ডিআইজি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কানাইঘাট থানা পুলিশের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে খলিলুর রহমানের বোন জয়বুন নেছা ও খয়রুন নেছা, ভাগনা গিয়াস উদ্দিন, এখলাছ উদ্দিন ও আশিক আহমদ উপস্থিত ছিলেন।