জগন্নাথপুরে প্যানেল চেয়ারম্যান গ্রেফতার, জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা

24

জগন্নথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, গত ২৫ জুন চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া দরিদ্র লোকজনের মধ্যে ভিজিএফ এর ১০ কেজির সরকারি চাল বিতরণ করছিলেন। এ সময় ভুক্তভোগীরা প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদের কাছে গিয়ে চাল ওজনে কম দেয়ার নালিশ করেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদ ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়াকে চাল কম না দেয়ার কথা বলেন। এ নিয়ে প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া রাগে-ক্ষোভে কিছু চাল বিতরণ না করে তিনি চলে যান। খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের আলোকে ২৪ জুলাই সোমবার উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কার্যালয়ে শুনানী হওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উপর আস্থা হারিয়ে তড়িঘড়ি করে একই ঘটনায় ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া বাদী হয়ে জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২০, তারিখ ২৪/০৭/২০১৭ইং। উক্ত মামলা দায়েরের দিন পুলিশ সোমবার বেলা ১ টার দিকে জগন্নাথপুর সদর বাজার এলাকা থেকে প্যানেল চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা বাবুল মাহমুদকে (৩৭) গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। তিনি চিলাউড়া গোলাপাড়া পুঞ্জি গ্রামের কাছন মাহমুদের ছেলে।
এদিকে-এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তি প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদ গ্রেফতার হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ঝাঁকে ঝাঁকে লোকজন থানায় ছুটে যান তাঁকে এক নজর দেখার জন্য। পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি পক্ষ তাঁকে ফাঁসিয়েছে। প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদের নেতৃত্বে অন্যান্য ইউপি সদস্যরা চেয়ারম্যান আরশ মিয়াকে অনাস্থা দিতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। এছাড়া প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের পুত্র আজিজুস সামাদ ডন অনুসারী আ’লীগ নেতা। তবে চেয়ারম্যান আরশ মিয়া ও মামলার বাদী ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান অনুসারী আ’লীগ নেতা। এ ব্যাপারে গ্রেফতারকৃত প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদ বলেন, আমি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছি। উক্ত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার এসআই কবির উদ্দিন জানান, সরকারি ভিজিএফ এর চাল বিতরণে বাধা, লুটপাট ও চুরির অভিযোগে আরেক ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়া জগন্নাথপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার আলোকে প্যানেল চেয়ারম্যান বাবুল মাহমুদকে গ্রেফতার করে সুনামগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।